,

it-shop.Com

রমজানের সম্মানে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা!

Spread the love

অনলাইন ডেস্ক : রমজান মাসে কাশ্মীরে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সবধরনের সামরিক অভিযান স্থগিত তথা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। পবিত্র রমজানে শান্তিময় পরিবেশ বজায় রাখতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো এমন পদক্ষেপের ঘোষণা দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। বুধবার ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে।

কাশ্মীরে গত কয়েক মাসে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে বেশ কয়েকজন নিহতের ঘটনায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতেই এই ঘোষণা দিলো ভারত সরকার।

টুইট বার্তায় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ঘোষণার ফলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে রমজান পালন করতে পারবেন মুসলিমরা। তবে যদি হামলা চালানো হয় ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর পাল্টা হামলা চালানোর অধিকার রয়েছে।

কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি প্রত্যাশা করছেন, ভারতের এই সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদি সংলাপের জন্য শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তবে, কাশ্মীরের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

১৯৪৭ সাল থেকে তথাকথিত সীমান্ত রেখা (লাইন অব কন্ট্রোল) দ্বারা কাশ্মীর বিভক্ত রয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই কাশ্মীরকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে।

ইরানের সাথে যুদ্ধের হুমকি
আদিব মাহফুজ

ইরানের সাথে জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে ছয় জাতি পারমাণবিক সমঝেতা চুক্তি থেকে সরে আসার যে সিদ্ধান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়েছেন তার নানামাত্রিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। ইসরাইল ও সৌদি জোটের মিত্ররা যখন ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তখন জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং চীন কিভাবে ইরানের সাথে চুক্তি টিকিয়ে রাখা যায় তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আর ইসরাইল প্রতিনিয়ত ইরানে হামলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। ৬০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে ইরান বলছে- স্বার্থ রক্ষার গ্যারান্টি পেলে দেশটি এখনো ওই চুক্তি মেনে চলতে পারে। অর্থাৎ চীন ও রাশিয়া ছাড়াও ইউরোপের সাথে আরো ইরানকে একাট্টা হওয়ার পথ করে দিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। চীনের সাথে আলোচনা গঠনমূলক ও ইতিবাচক হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। এরপর জারিফ ছুটছেন রাশিয়ায়।

ইরানকে এ চুক্তি মেনে চলার সীমাবদ্ধতা থেকে যুক্তরাষ্ট্র যেন নিজেই মুক্তি দিয়েছে। তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ও আরকানসাসের সিনেটর টম কটন মনে করছেন যত বেশি দ্বন্দ্বে উত্তীর্ণ হবে যুক্তরাষ্ট্র ততই ফায়দা লোটা যাবে। কিন্তু বিশ্ব পরিস্থিতি ও মাঠের বাস্তবতা ভিন্ন, তার জ্বলন্ত উদাহরণ লেবানন ও ইরাকের নির্বাচনী ফলাফল।

মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনীতিতে ইরান এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। ইরাকের নির্বাচনে ইরান সমর্থিত মুকতাদা আল সদরের জোট নির্বাচনে জয়লাভ করেছে। ট্রাম্প চাইলেও মুহুর্মুহু ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ইরানের সেনাবাহিনী, মিত্র ও ওই অঞ্চলের অর্থনৈতিক স্বার্থের বিরুদ্ধে অযৌক্তিকভাবে প্রতিশোধের ক্ষমতা নিয়ে দেশটি দখল করবেন সেই দিনের যে ইতি ঘটেছে সিরিয়া তার আরো একটি উদাহরণ। বেসিক নিউক্লিয়ার সায়েন্স সম্পর্কে যে দেশের প্রযুক্তি জ্ঞান ও সমঝোতা রয়েছে সেখানে গায়ের জোরে বোমা মেরে যুদ্ধ ডেকে আনার যে অপরিসীম ক্ষতি তা যুক্তরাষ্ট্রকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম বহনের ঝুঁকি নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র এমন সব অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে যা অপ্রয়োজনীয়।

এই মুহূর্তে ইরান একা নয়। মোটামুটি তিনটি ফ্রন্টে যুদ্ধ চলছে। বাকযুদ্ধ, বাণিজ্য ও প্রক্সি ওয়্যার (ইয়েমেন ও সিরিয়ায়)। ইসরাইলি ও মার্কিন মিডিয়া খোলাখুলিভাবে ইরানে রেজিম চেঞ্জ বা শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা বলছে। ৪০ বছর আগে এটি যত সহজ ছিল এখন তা অতটা সহজ নয়। ১৯৫৩ সালে ইরানে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক মোসাদ্দেক সরকারকে ক্যু করে সরাতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআইসিক্স টাকা ঢেলেছিল তা এখন ওপেন সিক্রেট।

ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ইরানের বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধের রূপরেখা বাতলে দিলেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইরানকে ৪০টি সুপার জেট দিতে যাচ্ছে রাশিয়া। এর আগে বোয়িং ও এয়ারবাস ইরানের কাছে বিমান বিক্রির চুক্তি করলেও ইউএস ট্রেজারি তাদের সে সার্টিফিকেট প্রত্যাহার করে নেয়।

সিএনএন’কে জন বোল্টন বলছেন, ইউরোপের যে কোম্পানিগুলো ইরানের সাথে বাণিজ্য করছে সেগুলোর ওপর মার্কিন অবরোধের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য দিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ফক্স নিউজকে বলেছেন, ইরানের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার অর্থ কারো ওপর অবরোধ আরোপ নয় বরং তেহরানের সাথে নতুন একটি চুক্তির পথ খুঁজে পেতে চেষ্টা করা। আর সে লক্ষ্যেই যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাচ্ছে।

ফ্রান্স ও জার্মানি ইতোমধ্যে ইউরোপকে ইরানের বিরুদ্ধে অবরোধের ব্যাপারে পাল্টা কৌশল নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল বলেছেন, ইউরোপের ভাগ্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে রেখে আর দীর্ঘদিন আস্থায় থাকা যায় না।

এর আগে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান বলেছিলেন, বিশ্ব নেতৃত্ব ইউরোপকেই নিতে হবে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান টেলিফোনে মার্কিন আধিপত্য কমানোর বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ট্রাম্পের ইরানের সাথে চুক্তি থেকে সরে আসা জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদন হওয়া ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের সরাসরি লঙ্ঘন।

বাস্তবতা হচ্ছে, লিবিয়া, ইরাক, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে যত সহজে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে ইরানে তা অসম্ভব। কারণ ইরান সাম্রাজ্যবাদীদের আধিপত্য মেনে না নিয়ে বিকল্প শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। রয়েছে নিজস্ব সামরিক উদ্ভাবনা। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের ভূকৌশলগত দেশ ইরাক, লেবানন ও সিরিয়ায় রয়েছে দেশটির ব্যাপক প্রভাব। লেবানন ও সিরিয়ায় সরাসরি ইরানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। ফলে ইরানের ওপর যেকোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে। যাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সৌদি আরব ও ইসরাইল।

it-shop.Com

     এই বিভাগের আরও খবর