,

it-shop.Com

দণ্ডিত তারেক বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাবেন না 

Spread the love

অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আপাতত বাংলাদেশের পাসপোর্ট পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদপ্তর (ডিআইপি)। আদালতে দণ্ডিত হওয়ায় পাসপোর্ট আদেশ, ১৯৭৩ অনুযায়ী তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্ট পাওয়ার সুযোগ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে ডিআইপি।

দণ্ডিত হওয়ার আগপর্যন্ত তারেক রহমান হাতে লেখা পাসপোর্ট বহন করলেও সেটির মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়েছে। দেশে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) চালু হলেও তা পেতে আবেদন করেননি তিনি। এরই মধ্যে দুটি মামলায় আদালত তাকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ২১ এপ্রিল লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘তারেক রহমান বাংলাদেশের পাসপোর্ট হস্তান্তর করে তার নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন।’ বিএনপির পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ জানানো হলে দেশে ফিরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এর নথিও দেখান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারেক রহমান যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মাধ্যমে ২০১৪ সালের ২ জুন তার পাসপোর্ট লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ফেরত পাঠান। একই সঙ্গে তার স্ত্রী ও মেয়ের পাসপোর্টও বাংলাদেশ হাইকমিশনে ফেরত পাঠানোর কথা বলেন তিনি। পাসপোর্ট ‘সমর্পণ’ করায় তারেক রহমান ‘বাংলাদেশের নাগরিক নন’ বলেও মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।

অবশ্য বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবেই লন্ডনে বসবাস করছেন। তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেননি। অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেননি। তিনি ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন।

ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান সমকালকে বলেন, এমআরপির জন্য তারেক রহমান কোনো আবেদন করেননি। তার কোনো মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টও অধিদপ্তরের কাছে আসেনি। মহাপরিচালক বলেন, তারেক রহমান হাতে লেখা পাসপোর্ট নিয়ে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান। লন্ডন থেকে তিনি আবেদন করে তার সেই পাসপোর্টের মেয়াদ ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। ২০১০ সালের ১ এপ্রিল থেকে দেশে এমআরপি দেওয়া শুরু হলেও তিনি এ জন্য আবেদন করেননি। এখন তার পাসপোর্টের মেয়াদও নেই।

লন্ডনে তারেক রহমানের পাসপোর্ট সমর্পণের বিষয়ে মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান বলেন, হাইকমিশনে সেই পাসপোর্ট থাকলেও অধিদপ্তরে তা পাঠানো হয়নি। মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো পাসপোর্ট পাঠানোর নিয়মও নেই। কেউ যদি মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেন, কেবল সেইসব আবেদনপত্র ও পুরনো পাসপোর্ট দূতাবাস বা হাইকমিশন থেকে অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই করে নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।

বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ, ১৯৭৩-এর ৬ ধারার বিভিন্ন উপধারায় বলা হয়েছে কারা পাসপোর্ট পাওয়ার অযোগ্য। ৬ ধারার (১)-এর (এ) উপধারায় বলা হয়েছে, ১৯৭২ সালের দালাল আইনে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি পাসপোর্টের আবেদনের অযোগ্য হবেন। (সি) উপধারায় বলা হয়েছে, আবেদনের সময় থেকে পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে কেউ অন্তত দুই বছর দণ্ডপ্রাপ্ত হলে পাসপোর্ট পাওয়ার যোগ্য হবেন না। (ডি) উপধারায় বলা হয়েছে, মাদক বা অস্ত্র চোরাচালান, মানব পাচার, নারী ও শিশু পাচার বা মুদ্রা পাচারে দোষী সাব্যস্ত বা অভিযুক্ত ব্যক্তি পাসপোর্ট পাবেন না। (ই) উপধারা অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় আদালতে হাজিরা থেকে বিরত থাকলে কিংবা আদালত কর্তৃক দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তি পাসপোর্ট পাওয়ার যোগ্য হবেন না। (এফ) উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো আবেদনকারীকে যদি অনাকাঙ্ক্ষিত কার্যক্রমের পর কোনো দেশ থেকে ফেরত পাঠানো হয়, ওই ব্যক্তি পাসপোর্ট পাবেন না।

এ ছাড়া ৬-এর ২ ধারার (এ) উপধারায় বলা হয়েছে, সরকার যদি মনে করে, কোনো ব্যক্তি বিদেশে অবস্থান করে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন, ওই ব্যক্তি পাসপোর্ট বা ভ্রমণ কাগজের অযোগ্য বিবেচিত হতে পারেন।

তারেক রহমান অর্থ পাচারের একটি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে সাত বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া ফৌজদারি আদালতে তার বিরুদ্ধে অন্তত ১৮টি মামলা বিচারাধীন। কয়েকটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

it-shop.Com

     এই বিভাগের আরও খবর