,

it-shop.Com

রহমতের দশ দিন স্বর্গীয় আনন্দে মুমিনের হৃদয় ভুবন আলোকিত হয়ে উঠবে

Spread the love

অনলাইন ডেস্ক : পবিত্র মাহে রমজানে রোজা রাখার সৌভাগ্য আল্লাহতালা আমাদেরকে দান করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। পবিত্র এ রমজানে মুমিন মুত্তাকীদের আধ্যাত্মিক-বাগানে ঘটবে নব-বসন্তের সমারোহ। আর স্বর্গীয় আনন্দে মুমিন মুত্তাকীদের হৃদয় ভুবন আলোকিত হয়ে উঠবে।

ইসলামি পঞ্জিকা মোতাবেক প্রতি বছর মাহে রমজান আসে, আবার চলে যায়। মুসলিম জাহানের প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ-সবল নর-নারী এ মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় ছোবহে ছাদেক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বপ্রকার পানাহার এবং স্বামী-স্ত্রীর দৈহিক মিলন হতে বিরত থেকে রোজা পালন করেন। রমজান আসে আমাদের জন্য অবারিত ইবাদত বন্দেগীর বাড়তি সুযোগ নিয়ে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুমিন বান্দারা অন্বেষণ করে কীভাবে আল্লাহপাকের বিশেষ নৈকট্য অর্জন করা যায়।

রোজার মূল উদ্দেশ্য ব্যক্ত করতে গিয়ে আল্লাহতালা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেছেন, হে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হলো, যেভাবে তা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীগণের জন্য, যেন তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পার (সুরা বাকারা: ১৮৩)।

তাই যাদের পবিত্র রমজান লাভের সৌভাগ্য অর্জিত হয়েছে, তাদের উচিত হবে, অবজ্ঞা-অবহেলা আর কোন প্রকার বাহানার আশ্রয় না নিয়ে রোজা রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। কেননা, মানুষ মরণশীল, যে রমজান আমরা লাভ করেছি তাতে যদি রোজা না রেখে হেলায় কাটিয়ে দেই আর এমনও হতে পারে যে, এই রমজানই আমার জীবনের শেষ রমজান। তাহলে আমাদের সবার উচিত নয় কি এই রমজান থেকে পুরোপুরি ফায়দা অর্জন করা? রমজান এমন একটি মাস, যে মাসের সাথে অন্য কোন মাসের তুলনা চলে না। রোজা মানব হৃদয়ের যাবতীয় পাপ মোচন করে জান্নাত লাভের নিশ্চয়তা প্রদান করে।

এ বিষয়ে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি বিশ্বাস এবং আন্তরিকতা আর উত্তম ফল লাভের বাসনায় রমজান মাসে রোজা রাখে, তার পূর্বের সর্বপ্রকার পাপ ক্ষমা করা হবে (বোখারি ও মুসলিম)।

রোজার মাহাত্ম্য ও মর্যাদাকে বুঝাতে গিয়ে আমাদের প্রিয়নবী (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক জিনিসের জন্য নির্দিষ্ট দরজা থাকে আর ইবাদতের দরজা হচ্ছে রোজা (জামেউস সগীর)। তিনি (সা.) আরো বলেছেন, রোজা ঢাল স্বরূপ এবং আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার একটি নিরাপদ দুর্গ (মুসনাদ আহমদ বিন হাম্বল)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেন, যখন রমজান আসে তখন জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। আর শয়তানকে শিকলাবদ্ধ করা হয় (বোখারি)।

নবী করিম (সা.) আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, যারা রমজান মাসে প্রবেশ করেছে এবং আন্তরিকতার সাথে রোজা রাখছে, তাদের চেহারায় এক পবিত্র পরিবর্তন দেখা যায়, তাদের আত্মা নূরানী হয়ে যায় এবং তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়। আর শয়তানকেও শিকল দিয়ে বেধে রাখা হয়। কিন্তু যদি কোন ব্যক্তি রমজান থেকে কল্যাণ না উঠায় তাহলে এই রোজা তার কোন কাজে লাগবে না।

পবিত্র এ মাসকে তিন দশকে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দশক রহমতের, দ্বিতীয় দশক-মাগফিরাতের আর তৃতীয় দশক হলো নাজাতের। আমাদের সবার উচিত হবে, রহমতের এ দশক থেকে পুরোপুরি ফায়দা হাসিল করা আর রমজানের কল্যাণরাজি দ্বারা নিজেদের সুশোভিত করা। আমরা যদি হজরত রসুল করিম (সা.)-এর জীবনে রমজানের দিনগুলোর দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে দেখতে পাই তিনি (সা.) রমজানে কত বেশি নফল ইবাদত আর দান খয়রাত করতেন। অন্য সময়ের তুলনায় রমজানে তার (সা.) ইবাদত আর দান খয়রাতে আরো বেশি গতি লাভ করতো আর নিঝুম রাতগুলো নফল নামাজ আর দোয়া ও আহাজারিতে জেগে থাকতো।

তাই কোরআন তেলাওয়াতের গুঞ্জনে মুখরিত করে তুলতে হবে আমাদের চার পাশ আর কোরআনের আলোয় যেন আলোকিত হয় সমগ্র বিশ্ব। এছাড়া তারাবি, তাহাজ্জুদ প্রভৃতি নফল নামাজ আর দোয়ার মাধ্যমে জাগিয়ে রাখি আমাদের রাতগুলো আর দিনগুলোও যেন কাটাই আল্লাহর স্মরণে।

প্রথম এই দশকে মহান আল্লাহর কাছে আমাদের সবার এ কামনাই হওয়া উচিত, তিনি যেন আমাদেরকে তার রহমতের চাঁদরে আবৃত করে রাখেন আর তার রহমতের বৃষ্টিদ্বারা আমাদের হৃদয় সিক্ত করেন। সেই সাথে এই প্রার্থনাও থাকবে, পুরো রমজান যেন সুস্থতার সাথে বিশেষ ইবাদতে রত থেকে এবং তোমার অধিকার এবং তোমার বান্দার অধিকার আদায় করতে পারি, আমিন।

it-shop.Com

     এই বিভাগের আরও খবর