অনলাইন ডেস্ক : ছাত্রলীগের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে কারা আসছেন, এ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। সবার দৃষ্টি এখন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দিকে। দুই-একদিনের মধ্যে তিনিই এই কমিটি ঘোষণা করবেন। শনিবার ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে ছাত্রলীগের গঠনতান্ত্রিক সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর এই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের একটি তালিকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে। শনিবার কাউন্সিল অধিবেশন থেকে বিদায়ী ছাত্রলীগ নেতারা এই তালিকা তৈরি করে তার হাতে তুলে দেন। আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন নেতাও এই তালিকা তৈরির প্রক্রিয়ায় ছিলেন। অবশ্য এর আগেই বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে পদপ্রত্যাশীদের সার্বিক বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেও। সে অনুযায়ী নিজস্ব একটি প্রার্থী তালিকাও রয়েছে তার কাছে। ২ মে সংবাদ সম্মেলন এবং শুক্রবার ছাত্রলীগের সম্মেলন উদ্বোধনের পর রাতে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠককালে এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এখন এসব তালিকা থেকে আরও অধিকতর যাচাই-বাছাই করেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই নেতা বেছে নেবেন প্রধানমন্ত্রী।
নতুন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে পরিশ্রমী, ত্যাগী, মেধাবী, নিয়মিত ছাত্র, সাহসী, শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয়, পরিচ্ছন্ন ইমেজ ও সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন এবং যারা অতীত দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন- তাদের মধ্য থেকেই শীর্ষ নেতৃত্ব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা রয়েছে। বিশেষ করে অতীতের কমিটিগুলোতে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির থেকে অনুপ্রবেশের অভিযোগ ওঠায় এবার কোনো অবস্থায়ই যেন অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটতে না পারে- সে দিকটাতেই বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে।
সর্বশেষ গতকাল রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ছাত্রলীগের কমিটির শীর্ষ পদে যাতে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে জন্য অধিকতর যাচাই-বাছাই চলছে। তড়িঘড়ি করে ছাত্রলীগের কমিটি করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী যথাসময় এ কমিটি ঘোষণা দেবেন।
তিনি বলেছেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ পদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে নামের যে তালিকা গেছে, তাতে নারীদের নামও আছে। তবে সবকিছুই প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে।
ঘুরেফিরে সাত নাম : নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাবনাময় প্রার্থী হিসেবে ঘুরেফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ূয়া সাত নেতার নামই উঠে আসছে। ছাত্রলীগের নতুন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসতে ইচ্ছুকদের বিশাল নামের তালিকা থেকে এই সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়েছে। তবে এই তালিকা থেকেই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
এরা হচ্ছেন- বিদায়ী কমিটির সহসভাপতি আদিত্য নন্দী, চৈতালী হালদার চৈতী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম, উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক শেখ ইনান, হোসাইন সাদ্দাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং ঢাবি শাখার সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স। তবে আলোচিত এই সাত নেতার মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে সামাজিক অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে প্রমাণাদি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অবহিত করা হয়েছে।
গত শুক্রবার সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে ২৮ বছরের বয়সসীমা বেঁধে দিলে এই তালিকার দুই-একজনের বাদ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ অবস্থায় ওই রাতে গণভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়সসীমা ২৯ বছর করার কথা জানিয়ে দেন বলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেছেন। তবে ছাত্রলীগের বিদায়ী সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা এমন দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।
এই বিভাগের আরও খবর