,

it-shop.Com

সেই বিপাশার বিয়ে আজ

Spread the love

 

অনলাইন ডেস্ক : তখন কতই বা বয়স ছিল তার— ৮ কিংবা ৯ বছর। উদ্ভ্রান্তের মতো ঘোরাফেরা করছিল সে। সুনামগঞ্জের দিরাই থানা পুলিশ উদ্ধার করেছিল আপনজন আর বাড়িঘর হারিয়ে ফেলা মেয়েটিকে। নিজের নাম বিপাশা আক্তার মুন্নি আর বাবার নাম জামাল মিয়া— এটুকু ছাড়া আর কিছুই জানাতে পারেনি সে।

প্রায় বছর দশেক আগের এই ঠিকানাবিহীন বিপাশার আপনজনদের খুঁজে পেতে কম চেষ্টা করেনি পুলিশ; কিন্তু কোনো খোঁজ মেলেনি। প্রথমে তার ঠাঁই হয় নিরাপদ হেফাজতে। পরে ২০১৫ সাল থেকে তাকে রাখা হয় সিলেটের রায়নগর সরকারি শিশু বালিকা পরিবারে। দিনে দিনে বড় হয়েছে সে। এরই মধ্যে সে পেরিয়ে এসেছে ১৮ বছর। শুক্রবার বিয়ে হচ্ছে সেই বিপাশার। তাকে ঘিরে মুখরিত পুরো শিশু বালিকা পরিবার আর সিলেট প্রশাসন।

বছর দশেক আগে যে বিপাশা ছিল ঠিকানাহীন, সেই বিপাশার বিয়ে হচ্ছে কিন্তু মহা ধুমধামে। পুরো সমাজসেবা অধিদপ্তর আপনজন হয়ে উঠেছে তার। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাই তার বিয়ে ঠিক করেছেন। সুনামগঞ্জেরই দিরাই উপজেলার বুড়াখালী রাজনগর (হালেয়া) গ্রামের প্রয়াত আবদুল আহাদের ছেলে আবদুল লতিফের সঙ্গে বিয়ে হবে বিপাশার। বিয়ের দাওয়াতপত্রও বিলি হয়ে গেছে এরই মধ্যে। কনেপক্ষের হয়ে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক জয়তি দত্ত। বড় বোন বিপাশার বিয়ে নিয়ে মহাব্যস্ত পরিবারটির শতাধিক কিশোরীও। বিয়ের পর বড় বোন চলে যাবে বলে আনন্দের মধ্যে কষ্টও হচ্ছে তাদের।

সরকারি শিশু পরিবারের (বালিকা) উপ-তত্ত্বাবধায়ক জয়তি দত্ত জানাচ্ছেন, যেভাবে আর দশটি বিয়ের আয়োজন হয়, বিপাশার বিয়েও ঠিক একইভাবে হচ্ছে। বরের খোঁজ পেয়ে উপ-পরিচালকসহ শিশু পরিবারের তারা বরের বাড়ি গেছেন। বরের মা রাবেয়া বিবিসহ পাত্রপক্ষও এসে দেখে গেছেন বিপাশাকে। এভাবেই চূড়ান্ত হয়েছে বিয়ের তারিখ। আর শুধু সমাজসেবা অধিদপ্তর নয়, এ বিয়েতে যুক্ত হয়ে পড়েছে পুরো প্রশাসন। প্রায় ৩০০ মানুষ আপ্যায়িত হবেন বিপাশার বিয়েতে। বরপক্ষ থেকে আসবেন ১০০ অতিথি, কনেপক্ষ থেকে অংশ নেবেন ২০০ জন।

সিলেট সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নিবাস রঞ্জন জানালেন, জেলা প্রশাসক আর পুলিশ সুপারও উৎসাহী হয়ে ভূমিকা রাখছেন এ বিয়েতে। বিপাশা যেন নিজেরই সন্তান— এমন অনুভূতি নিয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।

it-shop.Com

     এই বিভাগের আরও খবর