দর্পণ ডেস্ক : পথভ্রষ্ট মুসলমানদের সঠিক পথের দিশা, তাবলিগের কাজে সবাইকে নিয়োজিত হওয়ার তওফিক কামনা করে আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব। ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ কামনায় দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লি মোনাজাতে অংশ নেন।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন দিল্লির মাওলানা জমশেদ। বেলা ১১টা ৫০ মিনিট থেকে ১২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত হওয়া মোনাজাতে অংশ নেন লাখো মুসল্লি। ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে পুরো টঙ্গী প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা।
দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত, মুসলিম উম্মাহর রহমত, হেদায়েত, হেফাজত, মাগফিরাত, নাজাত, শান্তি-ঐক্য, দেশ ও বিশ্ব মানবতার কল্যাণ কামনা করা হয় আখেরি মোনাজাতে। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে সবাই জড়ো হয়েছিলেন তুরাগ তীরে। বিভেদ ভুলে সবাই এক কাতারে বসে মোনাজাত করেছেন।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা রাজধানীর বাড্ডা থেকে এসেছিলেন উজ্জ্বল মিয়া। তার সঙ্গে ছিলেন আরও ২০ জন মুসল্লি। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবারই দুই পর্বের ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নেই। অন্যান্যবার বিশ্বরোড থেকেই বাস বন্ধ থাকে। এবার উত্তরা পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আমরা হেঁটে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে পারলে মনে এক ধরনের শান্তি পাই। তাই হেঁটেই যাই। কোন কষ্ট মনে হয় না। যে কারণে রাস্তা বন্ধ থাকলেও ভোগান্তি মনে হয় না।’
রংপুরের বদরগঞ্জ থেকে এসেছেন দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি দল। তাদের মধ্যে থেকে নূরে আলম বলেন, ‘আমরা শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে অংশ নেয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, সঠিক সময়ের মধ্যে মাঠে পৌঁছতে পেরে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।’
এরআগে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ফজর নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। রবিবার ইজতেমার তৃতীয় দিন ফজর নামাজের পর ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের উদ্দেশে হেদায়েতি বয়ান পেশ করেন ভারতের মাওলানা ইকবাল হাফিজ।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়া মুসল্লিরাআখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাত ১২টা থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় রবিবার ভোর থেকে মুসল্লিরা ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে হেঁটে রওনা হন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাঁচ স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ৮, ৯ ও ১০ জানুয়ারি প্রথম দফা এবং ১৫, ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফার ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে চলতি বছরের ২৭ নভেম্বর।