দর্পণ ডেস্ক : মায়ের বয়স ১০৭ বছর। মেয়ে পড়েছে চুরাশিতে। বার্ধক্যে অবশ্য স্নেহ-আদরে ভাটা পড়েনি বিন্দুমাত্র। মেয়েকে লজেন্স খাওয়াচ্ছেন মা। সেই যেমন ছোটোবেলায় খাওয়াতেন! পকেট থেকে ক্যান্ডি বার করে কাঁপা কাঁপা হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মেয়ের দিকে। তোবড়ানো গালে হাসি ভরিয়ে মায়ের হাত থেকে সেই লজেন্স নিচ্ছেন মেয়ে। ৩৯ সেকেন্ডের ভিডিও মূলত এই মুহূর্তটাকে ঘিরেই। ‘বুড়ো’ মা তার ‘বুড়ো’ মেয়েকে লজেন্স খাওয়াচ্ছেন সেটা বড় কথা নয়, সেই মুহূর্তে স্নেহ-মমতার যে অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে মা-মেয়ের মুখে তাতেই মন ভরেছে নেটিজেনদের।
মেয়ে বয়সের ভারে ন্যুব্জ। মাও তাই। যৌবনের তেজ অস্তমিত সূর্যের মতোই জৌলুস হারিয়েছে। বোধকরি হাঁটাচলার আর তেমন ক্ষমতা নেই। পাশাপাশি চাকা লাগানো চেয়ারে বসে, মাঝে হাতখানেকের দূরত্ব। মেয়ে অন্যমনস্ক। তাঁকে ডাকবেন কী করে? পকেট হাতড়ে লজেন্স খুঁজে পেলেন মা। চওড়া হল ঠোঁট। যেন খুঁজে পেলেন হারানো ছেলেবেলা। আঙুলের মৃদু টোকায় নজর ফেরালেন মেয়ের। লজেন্স হাতে পেয়ে বৃদ্ধা মেয়ের মুখে যে হাসি ফুটে উঠল সেটা দুর্মূল্য।
চারপাশে যখন পান থেকে চুন খসলে সম্পর্ক ভাঙার জন্য সভ্য-আধুনিকেরা উঠে পড়ে লাগছে, বৃদ্ধ বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর হিড়িক পড়ে গেছে, সেখানে একটা ছোট্ট মুহূর্ত সম্পর্কের গভীরতাকে যেন নতুন করে তুলে ধরল। বুড়ো মা-মেয়ে মমতার ক্যানভাসে জীবনের রঙিন ছবি আঁকলেন। সম্পর্ক বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ফিকে হয় না, তার গুরুত্বও কমে না বরং পাশে থাকার, হাত ধরে চলার অঙ্গীকার আরও দৃঢ় হয়। অতীতকে আঁকড়েই ভবিষ্যতের দিকে চলতে হয়। নয়তো বড় বেজন্মা হয়ে ওঠে চারপাশ।