গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় তৃনমূলের কাউন্সিল ব্যতীত
কমিটি গঠনে তৃনমূল আ’লীগে ক্রমশ: ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষোভ। প্রভাবশালী নেতাদের
অনুসারীদের নিয়ে কমিটি গঠনে ত্যাগী নেতা-কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে।
কয়েকটি ইউনিয়ন কমিটিতে হঠাৎ করে দলে আসা নেতার অনুসারীরা গুরুত্বপূর্ন পদ
পাওয়ায় দ্বিধা বিভক্তি শুরু হয়েছে দলের অভ্যন্তরে। তৃনমূলের সম্মেলনে
দলের গঠনতন্ত্র ও কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে কমিটি গঠনে নেতাদের
অনুপস্থিতিতেই গ্রুপিং, সন্ত্রাসী মহড়া, হামলা, পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে।
এদিকে তৃনমূল নেতা-কর্মীদের ভোট ব্যতীত একের পর এক কমিটি গঠনে চম্পাপুর
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ভুন্ডুল হয়। দলের পদ প্রত্যাশী
প্রতিদ্বন্দ্বী দুই গ্রুপের চেয়ার ছোড়াছুড়ি, ভাংচুরের কারণে মঙ্গলবার
(১৯সভেম্বর) শেষ বিকেলে চম্পাপুরে সম্মেলন পন্ড হয়ে যায়। এসময় হামলা ও
পাল্টা হামলায় অন্তত: ১৫ জন আহত হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় সাংসদ অধ্যক্ষ মো:
মহিব্বুর রহমান সহ উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দ্রুত সম্মেলনস্থল ত্যাগ
করেন। এছাড়া সদ্য সমাপ্ত ধূলাসার, নীলগঞ্জ ও আসন্ন ধানখালী ইউনিয়ন
আ’লীগের সম্মেলন নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে হতাশা, ক্ষোভ ও
দ্বিধা বিভক্তি। ধানখালীতে তৃনমূল কমিটিতে প্রভাবশালী নেতার অনুসারী এক
অনুপ্রবেশকারীকে ঠেকাতে ইউপি ভবনে মঙ্গলবার দুপুরে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ
নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করেছে।
মঙ্গলবার রাতে চম্পাপুরের ঘটনা নিয়ে দলের উপজেলা কার্যালয়ে এক জরুরী সভা
শেষে উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুলতান মাহমুদ ও সাধারন
সম্পাদক এসএম রাকিবুল আহসান স্বাক্ষরিত এক প্রেস নোটে জানা যায়, চম্পাপুর
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও পটুয়াখালী জেলা পরিষদের সদস্য মো.
মোশাররফ মৃধাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সাথে তাকে আগামী ৭ দিনের
মধ্যে কেন বহিস্কার করা হবেনা সে মর্মে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে
মোশাররফ মৃধার বক্তব্য তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। প্রতিপক্ষ অন্যায় ভাবে তার
উপর দোষ চাপিয়ে দিয়েছে।
প্রত্যক্ষ দর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের
এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে আওয়ামী লীগ
নেতা মুক্তিযোদ্ধা বদিউর রহমান বন্টিনের সভাপতিত্বে তৃনমূলের এ
ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্বে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক
নির্ধারণের ক্ষেত্রে একাধিক প্রার্থী থাকায় ভোটের ঘোষণা দেয়া হয়। এরপরই
চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। ইউপি চেয়ারম্যান ও সভাপতি প্রার্থী রিন্টু
তালুকদার এ ঘটনার জন্য অপর সভাপতি প্রার্থী ও জেলা পরিষদ সদস্য এসএম
মোশাররফ হোসেনকে দায়ি করেন। তবে মোশাররফ হোসেনও পাল্টা অভিযোগ করে ইউপি
চেয়ারম্যানকে দায়ি করেন। পরিকল্পিতভাবে চেয়ারম্যানের গ্রুপ এ অবস্থা
করেছে এমন অভিযোগ মোশাররফের।
আহতদের মধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল গাজী ও আওয়ামী লীগের
ইউনিয়ন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন বাচ্চু মোল্লার অবস্থা গুরুতর।
আহত অন্যান্যদের স্থানীয় ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম
রাকিবুল আহসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চম্পাপুরের অনাকাংখিত
ঘটনার সাথে জড়িতদের প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে দল।