দর্পণ ডেস্ক : দুই বাংলার মধ্যে তিস্তা পানিচুক্তি নিয়ে জটিলতা কাটেনি। তাতেই আটকে পানি, গড়ায়নি তিস্তায়। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, পরিস্থিতি যদি অনুকূলে হতো, তাহলে “বন্ধুত্ত্বপূর্ণ” প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পানিবণ্টন মেনে নিতেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিস্তার পানিবণ্টন মেনে না নেওয়ায় তারা দুঃখ পেয়েছে… আমার ক্ষমতা থাকলে, নিশ্চিতভাবেই আমি তাদের সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন মেনে নিতাম … আমার কোনও সমস্যা নেই… বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু… এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
পদ্মাপারের দেশের সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে এপার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন, বাংলাদেশের সঙ্গে পানিবণ্টন চুক্তি করেছিলেন জ্যোতি বসু।’
২০১১-এ বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। সেই সময় তাদের সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করতে হয়। বাংলদেশের সঙ্গে তিস্তার পানিচুক্তির বিরোধিতা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার যুক্তি, ‘এক বিন্দুও’ জল পাবেন না তার রাজ্যের বাসিন্দারা।
২০১৭-এ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিস্তা শুকিয়ে যাচ্ছে। যদি এখানকার জল আমরা দিই, তাহলে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির মানুষদের সমস্যা হবে, চাষের কাজ করতে পারবেন না কৃষকরা…আমি একথা বলছি, কারণ আমি সেখানকার পরিস্থিতি দেখেছি।’ এরপরেই তোর্সা, মানসী, সঙ্কোশ এবং ধানসাই নদীর পানিবণ্টনের প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ তিস্তা নদী, বিশেষ করে ডিসেম্বর থেকে মার্চ, এই কটি মাস শুকনো মৌসুমে জলপ্রবাহ ৫,০০০ কিউসেক থেকে কমে দাঁড়ায় ১,০০০ কিউসেকেরও কম। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সেই সময় (যখন বাংলাদেশ ইলিশ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল), ইলিশের প্রতি আমাদের রাজ্যের বাঙালীর প্রীতির কথা মাথায় রেখে, আমরা ডায়মন্ডহারবারে একটি রিসার্চ সেন্টার তৈরি করি। তারা এখন ইলিশের ওপর কাজ করছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, যদি তারা গবেষণায় সফল হন, সারা বিশ্বে আমরা ইলিশ সরবরাহ করতে পারব। ‘বাংলায় ইলিশের কোনও ঘাটতি নেই’ বলেও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা বিবির প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ইলিশের মৌসুমে (জুলাই-সেপ্টেম্বর), কোলাঘাট এবং ডায়মন্ডহারবার থেকে আমরা পর্যাপ্ত ইলিশ পাই।
রহিমা বিবির প্রশ্নের অভিমুখ ছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বিধানসভায় আরও বলেন, তার দল যখন রাজ্যে ক্ষমতায় আসে, সেই সময় মাছ আসত মূলত ছত্তিশগড়ের রায়পুর, বিলাশপুর ও অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে।