গনেশ চন্দ্র হাওলাদার: পিআইবির মহাপরিচালক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি শাহ আলমগীরের জানাজা বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জানাজা শেষে তাঁর মরদেহে ফুল দিযে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি) এর নেতৃবৃন্দ। এসময় ডিএসইসি’র পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি জাকির হোসেন ইমন, সাধারণ সম্পাদক মুক্তাদির অনিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাওহার ইকবাল খান, নির্বাহী সদস্য নজরুল ইসলাম বশির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ রানা, সুমন ইসলাম, সদস্য তরুণ তপন চক্রবর্তী, শামসুল আলম সেতু ও গনেশ চন্দ্র হাওলাদার সহ সদস্যবৃন্দ।

এছাড়াও জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটি, বিএফইউজে, ডিইউজের নেতারা মরদেহে শেষবারের মতো ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। এরপর তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক শ্রদ্ধা জানান। তারপর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি, প্রথম আলো পরিবার, চ্যানেল আই, বৈশাখী টিভি, একুশে টিভি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জার্নালিস্ট ফোরাম, ঢাকা, নগর সাংবাদিক ফোরাম, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম নেতারা ফুল দিয়ে শেষশ্রদ্ধা জানান।

বিরুপ আবহাওয়া উপেক্ষা করেও পূবেই ভারাক্রান্ত মন নিয়ে তাঁকে শেষবারের মত একনজর দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত নবীন-প্রবীণ গণমাধ্যমকর্মী ও শত শত সহকর্মী।

সুদীর্ঘ ৪০ বছর তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাইতো আজকের বিরূপ আবহাওয়া ও বৃষ্টির চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে এ ভালো মানুষটির জানাজায় অংশগ্রহণ করতে শুধু সাংবাদিকরাই নন, ভালোবাসার টানে ছুটে এসেছেন বর্তমান ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিল্পী ও সাহিত্যিকরা। সবার মুখে একই কথা, ‘তার মতো ভালো মানুষ আর হয় না। চালচলন, কথাবার্তা, আচার-আচরণ ও হাসিমুখের এ মানুষটা বড্ড তাড়াতাড়ি বিদায় নিলেন।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজে- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মোল্লা জালাল, ডিইউজে সভাপতি আবু জাফর সূর্য়।বক্তৃতাকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি বলেন, ‘শাহ আলমগীরের মৃত্যুতে মনে হচ্ছে আমার প্রথম মৃত্যু হলো। তার সঙ্গে আমার ছেলেবেলা থেকে বন্ধুত্ব। একই সময়ে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, চাঁদের হাটের সদস্য হিসেবে এক সাথে চলা ও সাংবাদিকতা শুরু। একজন ভালো মানুষ বলতে যা বোঝায় তার সব গুণ শাহ আলমগীরের ছিল। তার মৃত্যুতে গণমাধ্যমের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল।’

শাহ আলমগীর সিএমএইচে চিকিৎসাধীন সময়ে সার্বক্ষণিক চিকিৎসার তদারককারী সাংবাদিক রহমান মোস্তাফিজ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘যেদিন তিনি অসুস্থ হয়ে সিএমএইচে ভর্তি হন সেদিন ভর্তির আগে আমি কয়েকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও শাহ আলমগীর ফোন রিসিভ করেননি। সাধারণতো তিনি এমনটা করেন না। ৩০-৪০ মিনিট পর মোবাইল ফোনে শাহ আলমগীরের বাসা থেকে ফোন করে উনাকে সিএমএইচ এ নেয়া হচ্ছে জানিয়ে সম্ভব হলে সেখানে যেতে বলা হয়। সেই থেকে মৃত্যু ঘোষণা পর্যন্ত আমি হাসপাতালেই ছিলাম।’

বেশ কিছুদিন থেকেই শাহ আলমগীরের রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়া, ডায়াবেটিসসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আজ সকাল ১০টায় লাইফ সাপোর্টে রাখা অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।