দর্পণ ডেস্ক :বাংলাদেশের রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামবাগে আবাসিক ভবন থেকে কেমিক্যাল গুদাম উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নেতৃত্বে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স এই অভিযান চালায়। এ অভিযানে এলাকার সাতটি ভবনের ইউটিলিটি সার্ভিসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

অভিযানে নেতৃত্বদানকারী ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ খান বলেন, ‘বুধবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক থেকে আবাসিক ভবনের কেমিক্যাল গুদামে আপাতত সরিয়ে রাখতে দু’টি স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সবাইকে নিজ উদ্যোগে আবাসিক ভবন থেকে কেমিক্যাল গুদাম স্থানান্তর করতে মাইকিং করা হয়েছে। পূর্ব নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই অভিযান শুরু করে। এ পর্যন্ত আমরা সাতটি ভবনের নিচে গুদাম পেয়েছি। সেসব বাসার ইউটিলিটি সার্ভিসসমূহ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনও বাসার মালিককে খুঁজে পাইনি। তবে আমরা মালিকদের মেসেজ দিয়ে এসেছি যে নিজ উদ্যোগে আগামী রবিবার (৩ মার্চ) মধ্যে গুদাম খালি করতে হবে। আমরা রবিবার আবার আসব। তখন যদি গুদাম কেমিক্যাল পাই তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আগামী একমাস এই অভিযান চলবে। এর মধ্যে সব গুদাম সরিয়ে ফেলা হবে বলে জানান তিনি।

অভিযান চলাকালীন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে। অভিযানের সময় তারা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তবে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ও টাস্কফোর্স কর্মকর্তাদের কঠোর অভিযানের মুখে পিছু হঠতে বাধ্য হয় তারা।

ঢাকা জেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিস্ট্রেট জানান, স্থানীয়রা কেমিক্যাল গুদাম সরাতে চায় না। তারা উল্টো পুরান ঢাকাকে ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে উল্লেখ করে সাধারণ বাসিন্দাদের এখান থেকে সরে যেতে বলছে।
বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে

বাংলাদেশ প্লাস্টিক প্যাকেজিং রোল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু তালেব ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, অভিযানটি সঠিক নয়। কারণ যেসব কেমিক্যাল বেশি দাহ্য বা তালিকাভুক্ত ২৯টি কেমিক্যালের কিছু এখানে নেই। এগুলো দাহ্য না। বিশেষজ্ঞরাও বলেছে এসব দাহ্য না। দাহ্য পদার্থের গুদাম সরিয়ে ফেলুক তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।

অভিযানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া একটি ছয়তলা ভবনের মালিক শরিফ মিয়া বলেন, আমাদের এখানে কেমিক্যাল আছে কিন্তু দাহ্য নয়। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি এগুলোতে ম্যাচের কাঠি ধরালে কখনও আগুন লাগবে না। তাই আমরা সরাই নাই। গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্ধ করে আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে।