দর্পণ ডেস্ক : বিশ্বের বৃহৎ ফৌজদারি মামলা হিসেবে কথিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পূর্ণ হলো আজ। বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণার একবছর পেরিয়ে গেলেও প্রকাশ হয়নি উচ্চ আদালতের রায়। ফলে দণ্ডিত ব্যক্তিরা উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারছেন না।

এ ছাড়া মামলার অভিযোগ থেকে যারা বেকসুর খালাস পেয়েছেন তারাও তাদের চাকরি ফেরত পায়নি। এমনকি তাদের পাওনা টাকা পয়সা পরিশোধ না হওয়ায় কষ্টকর জীবন যাপন করছেন সাবেক বিডিআরের কয়েক শ’ সদস্য।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের সময় হত্যা করা হয় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে।

(নিহত সেনার কফিন নিয়ে যাবার সময় এক সহকর্মীর কান্না)

বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা হয়। এরমধ্যে হত্যা মামলার রায় হয়েছে উচ্চ আদালতে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন এবং ২০০ আসামি বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয় উচ্চ আদালতে।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, উচ্চ আদালতের রায় প্রকাশ হলে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা মুক্তি পাবেন। একইসাথে বিস্ফোরক আইনের অপর মামলার ধীরগতির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শামীম সরদার বলেন, যে সমস্ত আসামির স্বল্প মেয়াদে সাজা হয়েছে, দুই বছর পাঁচ বছর দশ বছর; অনেক আসামির এই দশ বছর সাজা ইতিমধ্যে জেল কোডের বিভিন্ন রেয়াতসহ প্রায় খাটা শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এই আসামিরা বিস্ফোরক মামলা থাকার কারণে বের হতে পারছে না।

এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলছেন, আসামির সংখ্যা বেশি হওয়ায় এ ধীরগতি। তিনি বলেছেন, বিচারপতিরা খুব চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বিচার করার চেষ্টা করছেন, সেজন্যই হয়তো রায় প্রকাশ হতে দেরি হচ্ছে। হত্যা মামলার ব্যাপারে আপিল বিভাগে যদি ফয়সালা হয়ে যায় তাহলে তো বিস্ফোরক মামলার বিষয়ে কারো কারো ক্ষেত্রে অকার্যকর হয়ে যাবে।

আসামিপক্ষের আরেক আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, রায়ের কপি আমরা হাতে পেলে যাদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে কিংবা যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে তাদের পক্ষে আপিল কিংবা লিভ টু আপিল; যার ক্ষেত্রে যেটা প্রযোজ্য সেটি আমরা ফাইল করব।

এদিকে, পিলখানা ট্র্যাজেডির দ্রুত বিচার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেছেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি শহীদ সেনা দিবস ঘোষণার দাবিতে অনেক আবেদন করেছি কিন্তু সরকার তা করেনি।