দর্পণ ডেস্ক : ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে ব্যাংকের টাকা উদ্ধারে কেন কমিশন গঠন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন উচ্চ আদালত। গতকাল বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। : এর সাথে জড়িত ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের চিহ্নিত করে তাদের তালিকা করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের চিহ্নিত করে টাকা উদ্ধারে আইনগত কী কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে একটি রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে এই টাকা উদ্ধারে কেন কমিশন গঠনে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। আদালত বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরকে ইতিমধ্যে নাজুক করে দেয়া হয়েছে, অতিসত্বর এটা বন্ধ করতে হবে। এটা এভাবে চলতে দেয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত। আইনজীবী বাশার জানান, ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা তৈরি করে তা প্রকাশের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত পাচারের অর্থ যে দেশে থাকুক তা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় পদপে নিতে বলেছেন। এছাড়া ব্যাংকিং সেক্টরে অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দাখিলে কেন কমিশন গঠন করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঋণ দেয়ার েেত্র অনিয়ম এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে, টাকা উদ্ধারে কেন একটি কমিশন গঠন করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। রুলে গত ২০ বছরে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের অনিয়ম কেন খতিয়ে দেখা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। অর্থ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের এমডিকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে হবে। : গত ২৩ জুন মনজিল মোরসেদ ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের তদন্ত ও তা বন্ধে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য একটি কমিশন গঠনের দাবিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নোটিশ পাঠান তিনি। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, কয়েক বছর ধরে সরকারি ও প্রাইভেট ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা হতে হাজার হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন উপায়ে আত্মসাৎ হচ্ছে। কিন্তু তা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। যদিও ওই অর্থ নাগরিকদের গচ্ছিত অর্থ। তাই নোটিশ অনুসারে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের বিষয় তদন্ত ও প্রতিরোধে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য ১৯৫৩ সালের ইনকোয়ারি কমিশন অ্যাক্টের অধীনে একটি কমিশন গঠনের অনুরোধ জানানো হচ্ছে। : ওই কমিশন গঠনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালাউদ্দিন আহমেদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবিএম মির্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, সিটি ব্যাংক এন এ বাংলাদেশের সাবেক সিইও মামুন রশিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি রাখতে বলা হয়। নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পে মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে উপরোক্ত আদেশ ও রুল জারি করেন।

News Editor : Ganash Chanro Howlader. Office: 38-42/2 Distillery Road, 1st floor, Gandaria, Dhaka-1204.