দর্পণ ডেস্ক : বাংলাদেশের মেয়ে প্রিয়তা ইফতেখার মিস কালচার ওয়ার্ল্ডওয়াইড-২০১৮ মুকুট জিতেছেন। যিনি ফ্লাগ গার্ল নামে খ্যাত। অনেক প্রতিযোগীতায় তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেন। বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরেন বিশ্বের দরবারে। সোনার বাংলাদেশকে ভালোবাসে বলে দেশপ্রেমের টানে বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে চলেন তিনি। নিজের চেষ্টা ও মেধা দিয়ে এতটুকু পর্যন্ত এসেছেন। মানুষের ভালোবাসা আছে বলে ইচ্ছা শক্তি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। ধাপে ধাপে একের পর এক মুকুট জয় করছেন তিনি। বাংলাদেশের পতাকা যখন তিনি ভিনদেশিদের কাছে তুলে ধরেন তখন এই তরুণীর গর্বে বুক ভরে যায়।
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের জন্য কিছুটা একটা করতে পারলেই তার জীবনটা সার্থক হবে। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত আনন্দের দিন। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এই মাসে যে বিজয় এনে ছিল পৃথিবীর কোনো জাতি যা পারেনি।
১৬ ডিসেম্বর জিম্বাবুয়ের হারারেতে, দ্য ভেন্যু অ্যাভান্ডলেতে বর্ণিল অনুষ্ঠানে অপর ১৫টি দেশের প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে মুকুট জেতেন প্রিয়তা। মিস কালচার ওয়ার্ল্ডওয়াইড প্রতিযোগীতায় এটি বাংলাদেশের প্রথম অর্জন।
প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হয়েছেন জাম্বিয়ার বিশ্বাস মুকনকো এবং দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন জিম্বাবুয়ের ওয়েন্ডি মাতুরি। মিস পারসোনালিটির খেতাব পেয়েছেন রাশিয়ার আন্না কিরিলিনা এবং ডেস্টিনেশন মার্কেটিং-এর অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন রুয়ান্ডার মারি ওথেনস উওয়াকু।
প্রতিযোগিতার গ্রান্ড ফাইনালে বিশ্বের ২৬টি দেশের প্রতিযোগী অংশ নেন। এর মধ্যে সেরা ১৫ বাছাইয়ের পর শীর্ষ পাঁচ চূড়ান্ত করে জুরি বোর্ড। মিস কালচার ওয়ার্ল্ডওয়াইড-২০১৮ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করে ৫০টি দেশ।
জিম্বাবুয়ের মার্কেটিং, ন্যাশনাল ব্রাডিং ও ইনভেস্টমেন্ট মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা ডেস্টিনেশন মার্কেটিং ইন্টারন্যাশনাল এবার কালচার ওয়ার্ল্ডওয়াইড-২০১৮ আয়োজন করে। এর আগে প্রিয়তা ইফতেখার মিস ট্যুরিজম ওয়ার্ল্ড, মিস মাল্টিন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ও ইভেন্টে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
বিজয়ী হওয়া প্রিয়তা ইফতেখার বলেন, ‘বিজয়ের দিনে এমন একটি অর্জনে আমি খুব আনন্দিত। বিশ্বের বুকে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর তৃপ্তিটা বলে শেষ করা যাবে না। আমি মনে করি, আমার এই অর্জন বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিশ্বমণ্ডলে তুলে ধরার ক্ষেত্রটা এগিয়ে গেল।’
প্রিয়তা বলেন. ‘যারা অন্যদেশের প্রতিযোগী ছিলেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগ এবং জিম্বাবুয়ের অনেকে ক্রিকেট দিয়ে বাংলাদেশকে চিনেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাস তারা তেমনটা জানতেন না।
‘পুরো প্রতিযোগিতায় আমি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে তুলে ধরেছি। কেননা আমার মূল লক্ষ্যই ছিল সবার মাঝে বাংলাদেশকে তুলে ধরা।’
অনুষ্ঠান শেষে মিস কালচার ওয়ার্ল্ডওয়াইড-এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জিম্বাবুয়ের হারারের মেয়র হারবার্ট জোম্বা। সৌজন্য সাক্ষাতে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মেয়র।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও প্রিয়তা কাজ করছেন। দেশি-বিদেশি নারীদের নিয়ে কাজ করতে ২০০৮ সালে দ্য ফ্লাগ গার্ল গড়ে তোলেন প্রিয়তা। সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর ভ্রমণ স্বাচ্ছন্দ্য করতে সারা বিশ্বে গড়ে তুলেছেন ফ্রেন্ড নেটওয়ার্ক। এই বন্ধুরাও যেসব দেশে ভ্রমণ করেন তারাও সেসব দেশে তুলে ধরেন বাংলাদেশের পতাকা। এমন কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডও জিতেছেন প্রিয়তা ইফতেখার।