দর্পণ ডেস্ক : ভারতের পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা গায়ত্রী বিশ্বাস (৩২) বেশ কিছুদিন ধরে ভুগছিলেন জটিল এক সমস্যায়। মস্তিষ্কের টিস্যু বৃদ্ধি পেয়ে নাকের মধ্য দিয়ে ঠেলে বেরিয়ে আসে। কিন্তু রোগী সেভাবে গুরুত্ব দেননি।
অবশেষে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগীয় প্রধান ডাঃ তপনকান্তি হাজরার নেতৃত্বে সম্পন্ন হয় জটিল অস্ত্রোপচার। গায়ত্রী এখন ভাল আছেন।
মস্তিষ্কের আস্তরণ ও টিস্যু নাকের ভিতরে ঝুলেছিল। ব্রেনের সামনের দিক (ফ্রন্টাল লোব) নাকের ওপরের অংশ যেখান থেকে ব্রেন ও নাক আলাদা হয়, সেখানের প্লেটটা ফুটো করে ফানেলের মতো মোটা হয়ে টিস্যুটা বড় হয়ে ঝুলেছিল। বাইরে থেকে বোঝা যেত না। অবশেষে পুজোর আগে অক্টোবর মাসে দেখান ইএনটি বিভাগে। বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচার করেন বিভাগীয় প্রধান।
তপনবাবু জানিয়েছেন, প্রথমে ডান নাকের মধ্যে একটি পলিব রয়েছে ভাবা হলেও, পরে দেখা যায় আদপে ওটা মস্তিষ্ক থেকে এসেছে। আমরা প্ল্যান করলাম ‘বটুয়া ব্যাগ টেকনিক’ করার। বটুয়ার দড়ি যেমন টেনে বন্ধ করা যায়, সেরকম আমি এন্ডোস্কোপ দিয়ে দেখে সেলাই করার সুতো দিয়ে একটা ফাঁস বানালাম। ফাঁসটা বাইরে দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে আর শক্ত করে বটুয়ার গোড়াটা বাঁধতে শুরু করলাম। শক্ত করে বাঁধনের পর ব্রেনের জল আসা বন্ধ হল নাকে।
এইভাবে কিছুটা কেটে দ্বিতীয়বার ফাঁস লাগিয়ে আবার কাটলাম। নাকের ভিতর চারপাশ কেটে এবার ব্রেন ও নাকের যে অংশে ফুটো ছিল সেটা বন্ধ করলাম। ছিদ্র ঢাকার জন্য পায়ের পেশির ওপরের অংশ কেটে ঢোকানো হল। তারপর পায়ের চর্বিও কেটে ফুটো দিয়ে ঢুকিয়ে দিলাম।
তারপর নাকের হাড়ের পিছনের দিকের দেওয়ালের পাতলা হাড় কার্টিলেজ ঘুরিয়ে দিয়ে ওপরে সাপোর্ট দিলাম। টিস্যু গ্লু একরকমের আঠা দিয়েছি। এতে ব্রেনের থেকে জল বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা নেই পরবর্তীতে। এই বয়সে এ ধরনের অস্ত্রোপচার একটু ঝুঁকিপূর্ণ। মৃত্যুরও আশঙ্কা থাকে।