তিনি কাজ করতেন এক পানশালায় ম্যানহাটনে। নিউ ইয়র্ক সিটির শহরতলি পার্কচেস্টারে ছোট্ট এক-কামরার ফ্ল্যাটে থাকেন।  কিন্তু এ বার যে ঠিকানা বদলাতেই হবে! সে দিনের সেই ‘বার টেন্ডার’ আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো-কোর্তেজ এখন মার্কিন কংগ্রেসের নির্বাচিত প্রতিনিধি। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেমোক্র্যাট টিকিটে জিতে মাত্র উনত্রিশ বছর বয়সেই যাচ্ছেন ওয়াশিংটন ডিসিতে। কিন্তু পকেট যে ফাঁকা! নতুন কাজের প্রথম বেতন না-পাওয়া পর্যন্ত ওয়াশিংটনে একটা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেওয়ার ক্ষমতা তাঁর নেই বলেই জানালেন কংগ্রেসের সবচেয়ে কমবয়সি এই সদস্য।

ওয়াশিংটন ডিসি দেশের বিলাসবহুল শহরের তালিকায় পঞ্চম নাম । সেখানে এখন মাঝারি মানের অ্যাপার্টমেন্টেরই ভাড়া পড়ে প্রায় ২,৭০০ ডলার। জানুয়ারিতে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার আগে পর্যন্ত কোনও চাকরি নেই। তাই এই অঙ্ক জোগাড় করাটাও অসম্ভব বলে জানিয়েছেন আলেকজান্দ্রিয়া। এই সমস্যাটা দেশের একটা বড় অংশের বলে জানাচ্ছে হার্ভার্ড হাউসিংয়ের সাম্প্রতিক রিপোর্টও। বাড়িভাড়া জোটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন প্রায় ৪ কোটি মার্কিন নাগরিক। ২০০১ থেকে হিসেব করলে এখন দেশের বড় বড় শহরে বাড়িভাড়া বেড়েছে প্রায় ১৪৬ শতাশ!

মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রচারে আলেকজ়ান্দ্রিয়া ও তাঁর প্রেমিক খরচ করে ফেলেছেন তিল তিল করে নিজেদের জমিয়ে রাখা প্রায় ২ লক্ষ ডলার। কানাকড়িও কর্পোরেট সাহায্য নেননি এই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী। এ দিকে বিরোধী প্রার্থী জো ক্রাউলি যে প্রচারে প্রায় ৩০ লক্ষ ডলার খরচ করেছেন, তা নিয়েও বিশেষ মাথা ঘামাননি। তাঁর কথায়, ‘শুধুই এক জন শ্রমজীবী হিসেবে আমেরিকার ভোটে দাঁড়ানোটা যে কঠিন, সেটা জেনেই মাঠে নেমেছি। তাই হাল ছাড়িনি কখনও।’ ২০০৮-এ ক্যানসারে বাবাকে হারিয়েছেন আলেকজ়ন্দ্রিয়া। তার পর থেকে শুধুই ল়ড়াই। একের পর এক রেস্তরাঁয় কাজ করেছেন, পাশাপাশি রাজনীতি।নিজের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন ওই পানশালার চাকরি করতে করতেই। বার-কাউন্টারের আড়ালে একেবারে নিজের মতো করে। আগামী দিনেও তাই বিস্তর লড়াইয়ে নামতে রাজি আলেকজ়ান্দ্রিয়া।