দর্পণ ডেস্ক :
বিমানের বহরে যুক্ত হওয়া অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার দুপুরে হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এটির উদ্বোধন করেন তিনি।
আমেরিকার বোয়িং কোম্পানির তৈরি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ১৯ আগস্ট বিকেলে ঢাকায় এসে পৌঁছায়। যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল পেনফিল্ড থেকে কোনো যাত্রাবিরতি ছাড়াই টানা সাড়ে ১৪ ঘণ্টা উড়ে ঢাকায় অবতরণ করে এটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উড়োজাহাজটির নাম দিয়েছেন ‘আকাশবীণা’।
গত বুধবার দুপুরে ‘আকাশবীণা’র প্রথম পরীক্ষামূলক ফ্লাইট ঢাকা থেকে কলকাতায় যায়। বিমানের সিনিয়র পাইলট ক্যাপ্টেন ফজল আহমেদ ও বোয়িংয়ের ক্যাপ্টেন রিচার্ড এম ডেনটন ফ্লাইটটি পরিচালনা করেন। এতে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাসহ ২৯ জন আরোহী ছিলেন। বুধবার বিকেল পৌনে পাঁচটায় এটি ঢাকায় ফিরে আসে।
বিমানের বহরে বোয়িংয়ের আরও তিনটি ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার যোগ হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটি আগামী নভেম্বরে ও অন্য দু’টি ২০১৯ সালের শেষ দিকে আসবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি চাই বিমানে যারা কাজ করবেন তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন। যাতে দেশের কোনো বদনাম না হয় এবং দেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল থাকে।
তিনি বলেন, বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে বিদেশি এবং স্থানীয় যাত্রী, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দ্রুত ইমিগ্রেশন শেষ করে তাদের মালপত্র নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করতে পারে।
অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাজাহান কামাল বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্যের মধ্যে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) মুহম্মাদ এনামুল বারী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক এবং বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, তিন বাহিনী প্রধান, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালে বিমানের যাত্রা শুরু হয়েছিল ডাকোটা উড়োজাহাজ দিয়ে। আর আজকে যুক্ত হচ্ছে অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৮৭ ‘ড্রিমলাইনার আকাশবীণা’র।
‘আকাশবীণা’র আজকের এই অভিষেকের দিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য আরো একটি মাইলফলক, স্বপ্ন পূরণের দিন।
অতীতে বিমানের দুরবস্থার কথা স্মরণ করে বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে জাতীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমানকে পরিণত করে দুর্নীতি আর লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে। তারা নিউইয়র্ক, ব্রাসেলস, প্যারিস, ফ্রাঙ্কফুর্ট, মুম্বাই, নারিতা এবং ইয়াংগুন রুটে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়। চরম লোকসান আর অব্যবস্থাপনায় বিমান মুখ থুবড়ে পড়ে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্র জানায়, আকাশবীণা দিয়ে আপাতত মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ঢাকা রুটে ইকোনমি ক্লাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে (কর ও চার্জ ছাড়া) ২০০ মার্কিন ডলার। এছাড়া ঢাকা-কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে ইকোনমি ক্লাসের ভাড়া ২৯০ মার্কিন ডলার।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা জানান, উদ্বোধনের পর সন্ধ্যায় ‘ড্রিমলাইনার আকাশবীণা’র প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

News Editor : Ganash Chanro Howlader. Office: 38-42/2 Distillery Road, 1st floor, Gandaria, Dhaka-1204.