সাইফুল্লাহ নাসির, বরগুনা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের বরগুনার আমতলীর শাখারিয়া থেকে বান্দ্রা পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার সড়কের বাঁকে বাঁকে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে।মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না!প্রতিদিন এ মহাসড়কের কোন না কোন বাঁকে সড়ক দুর্ঘটনায় ঝরছে প্রাণ।প্রায়ই ভাড়ী হয়ে ওঠে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগ।এত দুর্ঘটনার জন্য গাড়ী চালকের অসাবধানতাকেই দায়ী করেছেন সচেতন নাগরিকরা।দুর্ঘটনা রোধে সাংকেতিক চিহ্নের দাবী করেছেন এলাকাবাসী।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে,২০১৭ সালে আমতলী উপজেলার সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ২৬৬ এবং এ বছরের সাত মাসে ১ হাজার ২০ জন আহত হয়েছে।২০১৭ সালে এ সড়কে ২৫ জন এবং এ বছরের গত ৭ মাসে ২০ জন নিহত হয়েছে।এর মধ্যে গত ২৬ জুলাই আল্লাহ ভরসা বাস ও মাহেন্দ্রোর মধ্যে মহাসড়কের মানিকঝুড়ি নামক স্থানে মুখোমুখি সংঘর্ষে ৮ জন নিহত এবং ২ জন আহত হয়েছে।দুমড়ে মুছড়ে গেছে অবৈধ যান মাহেন্দ্রো।এ সময় আহত দুজনের অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন। তাদের পরিবার চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে নিঃম্ব হয়ার জোগার হয়েছেন বলেও দাবি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের।
আমতলী উপজেলার ৩৭ কিলোমিটার মহাসড়কের শাখারিয়া,ব্রিকস ফিল্ড,কেওয়াবুনিয়া,মহিষকাটা, চুনাখালী,আমড়াগাছিয়া খানকা,ডাক্তারবাড়ী,ঘটখালী,তুলাতলী,একে স্কুল চৌরাস্তা ছুরিকাটা,খলিয়ান , মানিকঝুড়ি,খুড়িয়ার খেয়াঘাট,কল্যানপুর ও বান্দ্রা নামক স্থানের বেশী সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। প্রতিদিন এ ১৭ টি বাঁকের কোথাও না কোথাও দূর্ঘটনা ঘটে।এত দূর্ঘটনা ঘটলেও দূর্ঘটনা কবলিত বাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দূর্ঘটনা রোধে কোন সাংকেতিক চিহৃ দেয়নি।চালকরা তাদের ইচ্ছা মাফিক সড়কে গাড়ী চালিয়ে থাকেন।অনেক সময় অসাবধানতার কারনে বাঁক ঘুরতে গিয়ে দুর্ঘটনায় কবলিত হয়।
খুড়িয়ার খেয়াঘাট এলাকার সামসুল আলম বলেন,খুড়িয়ার খেয়াঘাটের বাঁকটি খুবই ঝুকিপূর্ণ।এ বাঁকটিতে কোন সাংকেতিক চিহৃ নেই।প্রতিদিন এখানে ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটেই থাকে।এ দুর্ঘটনা রোধে বাক সংস্কার করে সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এ পথে চলাচলকারীরা।
ছুড়িকাটা এলাকার আবুল গাজী বলেন,মহাসড়কের বাঁকগুলো ঘুড়তে গিয়ে প্রায়ই যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়।দুর্ঘটনা রোধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনে সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল হওয়ার দাবী জানাই।
বাসগাড়ী চালক শানু,মজিবুর রহমান ও নুর জামাল বলেন,ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁকগুলো ঘুরতে সমস্যা হয়। প্রায়ই বাঁকগুলো ঘুরতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।সচেতনভাবে গাড়ী চালাতে গিয়েও দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকেীশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, মহাসড়কের ১৭টি বাঁক সংস্কারের কাজ চলছে।তিনি আরো বলেন,ওই বাঁকগুলোতে সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা হবে।
বাংলাদেশ যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি তুসার রেহমান বলেন,অবশ্যই এসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক চিহ্নিত করার দায়িত্ব সওজ’র।কিন্তু এক্ষেতে সড়ক ও মহাসড়কেরই সওজের উদাসীনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।এর ফলে প্রায়ই সড়কে প্রাণ ঝরছে।এতোকিছুর পরেও সড়ক যোগাযোগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতা দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।