ঘুম সম্পর্কে ব্যাপক প্রচলিত কিছু ধারণা আমাদের স্বাস্থ্য এবং মেজাজের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে
ঘুম সম্পর্কে ব্যাপক প্রচলিত কিছু ধারণা আমাদের স্বাস্থ্য এবং মেজাজের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। একইসঙ্গে আমাদের আয়ু কমিয়ে ফেলছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল, রাতে ভাল ঘুমের ব্যাপারে সর্বাধিক প্রচলিত ধারণাগুলো ইন্টারনেট থেকে খুঁজে বের করেন। এরপর সেই দাবিগুলোকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণের সাথে মেলানো পরবর্তীতে স্লিপ হেলথ জার্নালে তাদের সেই গবেষণা প্রকাশিত হয়।
জেনে নিন ঘুমের আগে প্রচলিত ভুল ধারণাগুলো সম্পর্কে
১. অপর্যাপ্ত ঘুম
চারঘণ্টারও কম সময় ঘুমিয়ে আপনি নিজেকে সামলাতে পারবেন। এটা এমনই এক ধারণা যেটা কখনোই যাবেনা। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল দাবি করেছেন যে প্রতিরাতে চার ঘণ্টারও কম ঘুমিয়ে তিনি একটি সপ্তাহ কাটিয়ে দিতে পারেন। ব্যবসা বা উদ্যোক্তা পর্যায়ে সাফল্যের পেছনে অফিসের অতিরিক্ত সময়ে বিছানায় ঘণ্টাখানেক ঘুমিয়ে নেওয়ার যে একটা প্রভাব রয়েছে সেটা কমবেশি সবারই জানা।
তবুও গবেষকরা বলেছেন যে পাঁচ ঘণ্টারও কম সময় ঘুমানোকে স্বাস্থ্যকর বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে সেটা বরং স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর।
গবেষক ড. রেবেকা রবিন্স বলেন, “দিনের পর দিন পাঁচ ঘণ্টা বা তারও কম সময় ঘুমানো যে স্বাস্থ্যের ভয়াবহ পরিণতির ঝুঁকি অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়, তার ব্যাপক প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে।”
২. বিছানা যাওয়ার আগে মদ পান
অনেকের ধারণা, শরীর-মন শিথিল করার জন্য ঘুমের আগে মদ খান। গবেষক দলটি বলছে, এক গ্লাস ওয়াইন, ড্রামভর্তি হুইস্কি বা এক বোতল বিয়ার যাই হোক না কেন, এটি মূলত ঘুমের প্রাথমিক পর্যায় অর্থাৎ যে সময়ে চোখের দ্রুত নড়াচড়া কমে আসতে থাকে সেই স্তরটিকে বাধা দেয়। ঘুমের এই পর্যায়টি স্মৃতিশক্তি ও শেখার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।”
এজন্য মদ পানের পর আপনার হয়তো ঘুম ভাল হবে বা খুব সহজেই ঘুমিয়ে পড়বেন। তবে ঘুমের কারণে যে উপকারগুলো পাওয়ার কথা সেগুলো আর পাবেননা।
৩. ঘুমের আগে টিভি দেখা
রাত করে টিভি দেখা প্রসঙ্গে ডা. রবিনস যুক্তি দেন: ” আমরা যদি টেলিভিশন দেখে থাকি, তাহলে প্রায়ই রাতের খবরগুলো দেখা হয়। এতে করে আপনি মানসিক চাপ সেইসঙ্গে অনিদ্রা রোগ বা ইনসোমনিয়ায় ভুগতে পারেন।”
৫. বারবার স্নুজ বোতামে চাপ দেয়া
অনেকেই তাদের ফোনে একাধিক সময়ে স্নুজ টাইমার সেট করাটাকেই স্বাভাবিক মনে করেন। এটা ভেবে যে বিছানায় অতিরিক্ত ছয় মিনিটেই বুঝি বিশাল কোন পার্থক্য হবে। কিন্তু গবেষক দল বলেছেন যে যখন অ্যালার্ম বন্ধ হয়ে যায়, তখনই আমাদের উঠে যাওয়া উচিত। ডা. রবিনস বলেন: “এতে আপনার মতো সবাই কিছুটা আধো ঘুম আধো জাগা অবস্থায় থাকলেও তারা স্নুজ করার প্রলোভনকে প্রতিরোধ করতে পারবে।”