অনলাইন ডেস্ক : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের চর বড়লই হাজিটারী এলাকায় ফুলবাড়ী টু বাংলাবাজার পাকা রাস্তার প্রায় ২শ’ মিটার জায়গা গতবছরের বন্যায় ভেঙ্গে গিয়ে বিশাল আয়তনের গভীর খালের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তায় বিশাল আয়তনের খাল থাকায় চলাচলের ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে ওই এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ১০টি গ্রামের বিশ হাজার মানুষ। রাস্তার খাল ভরাটের দাবীতে স্মারকলিপি মানববন্ধনসহ বেশকিছু কর্মসূচি পালন করলেও গত ১০ মাসে সরকারি বা বেসরকারিভাবে খাল ভরাটের কোনো উদ্যোগ গৃহীত হয়নি।
খালটির আয়তন ও গভীরতা বেশি হওয়ায় এবং স্থানীয়ভাবে ভরাটযোগ্য না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাই খালের পাশের নিচু জমি দিয়ে কোনোরকমে চলাচল করতে হচ্ছে জনসাধারণকে। ফলে দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ। এ অবস্থায় সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের নিকট ফুলবাড়ী থেকে বাংলাবাজার পাকা রাস্তার খালটি ভরাটের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই রাস্তা দিয়ে বড়লই, চর বড়লই, হাজিটারী, বাংলাবাজারসহ প্রায় দশটি গ্রামের প্রায় বিশ হাজার মানুষকে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। বিকল্প কাঁচা রাস্তা থাকলেও সেটি দিয়ে ঘুরে যেতে হয় অনেক দূর। তাই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, ব্যবসায়ীদের মালামাল আনা-নেয়া, কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ, মূমুর্ষ রোগীর জরুরী চিকিৎসা সেবাসহ সবকিছুর জন্য এলাকাবাসীকে নির্ভর করতে হয় ওই রাস্তার উপর। কিন্তু গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটির প্রায় দুইশ’ মিটার জায়গা ভেঙ্গে গিয়ে বিরাট এলাকা জুড়ে গভীর খালের সৃষ্টি হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন খালের দক্ষিণ পাশের গ্রামগুলোর জনসাধারণ।
চর বড়লই গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান, হুজুর আলী, হাজিটারীর ওসমান গনি ও রশিদা বেগম বাংলাবাজার এলাকার পত্রিকা বিক্রেতা নজরুল ইসলাম জানান, রাস্তার এই খালটির জন্য আমাদের কয়েকটি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। খালটি ভরাটের দাবিতে এ এলাকার মানুষ বিভিন্ন দফতরের আবেদন করার পাশাপাশি খালের পাড়ে সমাবেশ ও মানববন্ধনও করেছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তাই প্রায় ১০ মাস ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।
বয়সের ভাড়ে নুয়ে পড়া ওই এলাকার বৃদ্ধ মোহাম্মদ আলী (৮২) বলেন, ‘হামরা (আমরা) আর কিচ্ছু চাই না বাহে, হামার ঘাটার (রাস্তার) খালটা ভরাট করি (করে) দ্যাও (দাও)। বুড়া বয়সে মানুষ গুলার কষ্ট আর সহ্য হয় না।’
বড়ভিটা ইউপি চেয়ারম্যান খয়বর আলী বলেন, বন্যার পর থেকে ওই অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ খুব কষ্ট করে খালটি পারাপার হচ্ছে। তাদের দাবির বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবেন্দ্রনাথ উরাঁও জানান, বন্যার সময় এবং পরে ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। খালটি ভরাটের ব্যাপারে গুরুত্ব সহকারে উপরমহলে পত্র দেয়া হয়েছে। আশা করছি দুই এক মাসের মধ্যে খাল ভরাটের কাজ শুরু হবে।