অনলাইন ডেস্ক : রাধিকা কুমারস্বামী। কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত মুখ। বহু কন্নড় ফিল্মে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ফিল্ম তায়ি ইল্লাদা তব্বালি। ২০০৩ সালে এই ছবিতে গৌরীর ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি কন্নড় ছবির
সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান।


একজন অভিনেত্রী ছাড়াও তাঁর আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি কর্নাটকের হবু মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী। রাধিকা আর কুমারস্বামীর মধ্যে বয়সের পার্থক্য অনেকটাই। রাধিকার জন্ম ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর (৩১ বছর)। আর কুমারস্বামীর জন্ম ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৫৯ (৫৮ বছর)। অর্থাৎ রাধিকার থেকে প্রায় ২৭ বছরের বড় কুমারস্বামী।
এক সময়ে এঁদের সম্পর্ক দেশজুড়ে বেশ হইচই ফেলে দিয়েছিল। রাধিকাকে কি স্ত্রীর আইনি মর্যাদা দিয়েছেন কুমারস্বামী? কুমারস্বামীর আইনত স্ত্রী কিন্তু রাধিকা নন।

কুমারস্বামীর প্রথম স্ত্রীর নাম অনিতা। সদ্য শেষ হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে পেশ করা হলফনামাতেও স্ত্রী হিসাবে অনিতার নামই রয়েছে। অনিতাকে নিয়েই তিনি প্রচার চালিয়েছেন। ১২ মে ভোট দিয়ে বেরিয়ে স্ত্রী-র সঙ্গে পোজও দিয়েছেন।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবেগৌড়ার ছেলে হলেও প্রথম দিকে রাজনীতিতে খুব একটা আগ্রহ ছিল না কুমারস্বামীর। বরং ফিল্মেই তাঁর শখ ছিল। তাঁর প্রযোজনার অনেক কন্নড় ছবিই সুপারহিট হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘চন্দ্র চাকোরি’। টানা এক বছর ধরে এই ছবিটি সিনেমা হলে দেখানো হয়েছিল। ফিল্মের সূত্রেই দু’জনের পরিচয়।


এর পরই রাধিকার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়। কিন্তু প্রথমে তাঁরা কেউই সেই সম্পর্কের কথা স্বীকার করেননি। পরে সংবাদমাধ্যমে তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়। ২০১০ সালে রাধিকা সংবাদমাধ্যমে সামনে তাঁদের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। জানান, ২০০৬ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। শমিকা কে স্বামী নামে তাঁদের একটি মেয়েও রয়েছে। এর পরই ২০১১ সালে কুমারস্বামীর নামে জনস্বার্থ মামলা করা হয় কর্নাটক হাইকোর্টে। মামলায় বলা হয়, হিন্দু বিবাহ আইন অমান্য করেছেন তিনি।
রণ প্রথম স্ত্রী অনিতা থাকা সত্ত্বেও কুমারস্বামী অভিনেত্রী রাধিকাকে বিয়ে করেছেন। হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।তবে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে মামলা খারিজ করে হাইকোর্ট।
কুমারস্বামী রাধিকারও প্রথম স্বামী নন। ২০০০ সালে শ্রী দুর্গা পরমেশ্বরী মন্দিরে রতন কুমার নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন রাধিকা। বিয়ের পরই রতনের মায়ের সুবাদে তাঁর অভিনয় জগতে আসা। তবে এই বিয়ে বেশি দিন টেকেনি। ২০০২ সালে রতনের কাছ থেকে রাধিকাকে নিয়ে চলে যান অভিনেত্রীর বাবা-মা। ওই বছরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রতন কুমার।

মৃত্যুর আগে রতন পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, রাধিকাকে জোর করে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে রাধিকার বাবা-মা-র অভিযোগ ছিল, নাবালিকা রাধিকাকে ভুল বুঝিয়ে বিয়ে করেছেন রতন। এমনকী তাঁকে গায়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টাও করেছেন রতন। আর এ সব নাকি রাধিকার ফিল্ম কেরিয়ার নষ্ট করার চেষ্টা ছিল, অভিযোগ তাঁর বাবা-মার।

রতনের মৃত্যুর পর ক্রমশ কুমারস্বামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে রাধিকার। কর্নাটক বিধানসভার ফল বেরনোর পর থেকেই কুমারস্বামীতে বুঁদ সোশ্যাল মিডিয়া। কারণ অবশ্যই রাজনৈতিক নয়। সোশ্যাল মিডিয়ার চর্চার বিষয় এখন এই রাধিকাই।