অনলাইন ডেস্ক : মাধ্যমিকের গন্ডি না পার হয়েই ভি.ডি.আর.এম.পি-এল.এম.এফ ডিগ্রি ব্যবহার করে জনগণকে দিয়ে যাচ্ছেন ‘চিকিৎসা সেবা’। লিখছেন অ্যান্টিবায়োটিকসহ হরেক রকম ওষুধ। তিনি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার খিলাবাজার এলাকার চিকিৎসক ডা: শ্রী বাবুল চন্দ্র দাস।
জানা যায়, উপজেলার রায়শ্রী দ. ইউপির খিলা বাজারে প্রতিদিন সকাল ৮ থেকে দুপুর ১টা, বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত রোগী দেখেন সকলের পরিচিত ডা: শ্রী বাবুল চন্দ্র দাস। পার্শ্ববর্তী পাথৈর গ্রামের মালি বাড়ির মৃত কানু লাল দাসের পুত্র বাবুল ১৯৯৬ সালে খিলা বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। এর কয়েক বছর পর তিনি খিলা বাজারে একটি ওষুধের দোকান দিয়ে বসেন। আস্তে আস্তে হয়ে উঠেন ডাক্তার বাবুল। বর্তমানে তার দোকানের নাম শুভ ফার্মেসী।
গ্রামীণ জনপদে প্রতিদিন তার কাছে চিকিৎসাসেবা নিতে ছুটে আসেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ নারী-পুরুষরা। প্রেশার মেপে তার জ্ঞান ভান্ডার থেকে বিভিন্ন ওষুধের পাশাপাশি দিয়ে থাকেন অ্যান্টিবায়োটিকও।
সরেজমিনে কথা হয় তার সাথে। আলাপচারিতার এক পর্যায়ে বাবুল জানান, তিনি মিরেরসরাই বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেছেন। কিছুটা কৌতূহলের সাথে তার বালিকা বিদ্যালয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বার বারই বালিকা শব্দটি উচ্চারণ করেন। কথোপকথনের একপর্যায়ে তিনি লজ্জামাখা মুখে বলেন, মেট্রিকে পড়েছি কিন্তু পরীক্ষা দেই নাই। এ সময় তিনি আবারো বালিকা বিদ্যালয়ের নাম বলেন। সাইনবোর্ডে ব্যবহৃত ভি.ডি.আর.এম.পি-এল.এম.এফ ডিগ্রী সম্পর্কেও কোনো সদুত্তোর দিতে পারেননি তিনি।
শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কনসালটেন্ট ডা: আহসানুল কবির জানান, চিকিৎসা বিষয়ে ডিগ্রি না থাকলে কেউ ব্যবস্থাপত্র দিতে পারেন না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক দেয়ার নিয়ম নাই। এ ক্ষেত্রে রোগ নিরাময়ের চেয়ে জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাবুলের পদবি দেখে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মানিক লাল মজুমদার জানান, এসব পদবি ভুয়া। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি আমাকে লিখিতভাবে জানায় তা হলে আমি বিষয়টি দেখবো।’ তিনি আরো বলেন, ‘এসব বিষয় সিভিল সার্জন দেখেন। আপনারা তুলে ধরলে ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সহজ হবে।’