অনলাইন ডেস্ক : কয়েক দিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানুষের দুর্ভোগ চলছেই। গতকাল ভোর থেকে কুমিল্লার দাউদকান্দি টোল প্লাজা হয়ে চান্দিনার মাধাইয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। কাঁচপুর ব্রিজ থেকে কুমিল্লার চান্দিনার মাধাইয়া পর্যন্ত প্রায় ৬৫ কিলোমিটার অংশে যানজট প্রকট আকার ধারণ করে। পরে তীব্র এ যানজট ঢাকার যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারে এসে ঠেকে। ফলে মহাসড়ক দিনভর ছিল অনেকটাই স্থবির। মেঘনা-গোমতী সেতুর ওপারে মুন্সীগঞ্জে ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছিল যানজট। কুমিল্লা থেকে ঢাকা যেতে যেখানে লাগে ২ ঘণ্টা, সেখানে এখন লাগছে ১০-১২ ঘণ্টা। চার লেনের গাড়িগুলো দুই লেনের ব্রিজে উঠতেই এ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে রোগী, সাধারণ যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রাক-কার্গো ভ্যান। যাত্রীদের পথে পথে খাবার, শৌচাগারের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, চান্দিনার মাধাইয়া, দাউদকান্দির গৌরীপুর, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, মদনপুরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অসংখ্য যানবাহন আটকে ছিল। এদিকে এ অবস্থার কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও মানুষকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। কাজী ফখরুল নামের একজন লিখেছেন, ‘সতর্কবার্তা! মহাসড়কে কুমিল্লা থেকে ঢাকা যেতে ১৫ ঘণ্টা লাগতে পারে। ট্রেনে চেষ্টা করুন।’ ঢাকাগামী বাসযাত্রী শাহজাদা এমরান জানান, তিনি ভোর ৫টায় কুমিল্লা থেকে রওনা হন। দুপুর ১২টায় ৭ ঘণ্টায় দাউদকান্দির হাসানপুর পর্যন্ত পৌঁছেন। এ পথ যেতে তার ১ ঘণ্টা লাগার কথা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আর রাজী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যেতে তার ১৬ ঘণ্টা লেগেছে। গাজীপুর ও টঙ্গী প্রতিনিধি জানান— গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ভোগড়া বাইপাস-মিরের বাজার, স্টেশনরোড-কালীগঞ্জ রুটে যানজট এখন নিয়মিত চিত্র। চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকা রুটে টঙ্গী বাজার বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্পের অধীন সড়ক মেরামত ও স্যুয়ারেজ ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে। এতে দিনরাত ওই মহাসড়কগুলোতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতায় মহাসড়কে দুর্ভোগের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। ভুক্তভোগী যাত্রী ও এলাকাবাসী জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ময়মনসিংহগামী যানবাহনের লাইন গাজীপুরের টঙ্গী ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে সালনা এলাকা পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার এলাকা ছাড়িয়ে যায়। এতে মহাসড়কে যানবাহন আটকা পড়ায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। এ অবস্থা বুধবার বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। গাজীপুর ট্রাফিক পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সালেহ উদ্দিন আহমদ জানান, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক এক সভায় গাজীপুরে মহাসড়কে যাতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় এ ব্যাপারে বিআরটি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অথচ এই প্রকল্পের কাজ কখন এবং কোথায় হচ্ছে তা ট্রাফিক বিভাগকে জানানো হচ্ছে না। তবে বিআরটি প্রকল্পের প্রকৌশলী মোমেন ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, কাজ শেষ হতে অন্তত একবছর সময় লাগবে। ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশকে জানিয়েই কাজ চলছে।’

News Editor : Ganash Chanro Howlader. Office: 38-42/2 Distillery Road, 1st floor, Gandaria, Dhaka-1204.