শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৪৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি প্রকাশ করেছে জামিয়া সমন্বয় কমিটি। লাইব্রেরির সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে সেটি বের করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, বই-খাতা খুলে পড়াশোনা করছেন শিক্ষার্থীরা। হঠাৎ লাইব্রেরির মধ্যে মারমুখী পুলিশ বাহিনী দেখে হুলস্থুল পড়ে যায় চারিদিক। মারধর থেকে বাঁচতে অনেকেই টেবিলের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ আবার দেয়ালের সঙ্গে লেগে ছিলেন। তবে কেউ পুলিশের সেই নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি। পুলিশ এলোপাথারি বেধড়ক পেটাতে থাকে ছাত্রদের। এ তাণ্ডবে আহত হয়ে বাম চোখের দৃষ্টি হারিয়েছে এক শিক্ষার্থী।
জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, এই সিসিটিভি ফুটেজ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি নৃশংসতার প্রমাণ। এতে প্রমাণিত হয়, কীভাবে রাষ্ট্রের পোষা সন্ত্রাসবাদীরা লাইব্রেরিতে ঢুকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়া পড়ুয়াদের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছে।
এদিকে ভিডিওটি সামনে আসার পর নতুন করে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অপরাধ দমন শাখা জামিয়া কাণ্ডের তদন্ত করছে। ভিডিওটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সিএএ এবং এনআরসি’র বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালীন গত ১৫ ডিসেম্বর তুমুল বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া এবং ওখলা এলাকা। শতাধিক মোটর বাইক, অন্তত তিনটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পুলিশ গেলে তাদের সঙ্গেও ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সেই বিক্ষোভের আঁচ কমতেই জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ুয়াদের বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।
ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, শুধু লাঠিপেটা করাই নয়, গুলিও চালিয়েছিল পুলিশ। লাইব্রেরিতে ঢুকে মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে এসেছিল দিল্লি পুলিশ। গুলি চালানোর কথাও শুরুতে মানতে চায়নি তারা।
তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় এক পুলিশ অফিসারকে গুলি চালাতে দেখা গেলে, শেষমেশ অভিযোগ মেনে নিয়ে বলেন, তাদের যে ভাবে ঘিরে ধরে পাথর ছোড়া হচ্ছিল, তাতে গুলি না ছুড়ে উপায় ছিল না। তবে বিক্ষোভকারীদের ভয় দেখাতে শূন্যে গুলি ছোড়া হয়েছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ।