দর্পণ ডেস্ক : বুধবার সংসদে পেশ হওয়া নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল প্রসঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির কন্যা তার ক্ষোভ উগরে দিলেন । তার দাবি, বিজেপি সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের কাউকে যে কোনও রকম আনুকূল্য প্রদর্শন করতে চাইছে না এটা তারই ইঙ্গিত। সংসদে এই বিতর্কিত বিল পাশ হওয়ার পরেই পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রধানের টুইটারে লেখা হয় ‘ভারত— মুসলিমদের দেশ নয়।’
প্রসঙ্গত পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রধান মেহবুবা মুফতিকে গত ৫ আগস্ট আটক করা হয়। ওইদিন সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস’ তুলে দেওয়া হয়। তার কন্যা সানা ইলতিজা মায়ের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করেন।
আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ যারা সেখানে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব চাইছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য এই বিলের বিরোধিতা করেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, এই বিলে মুসলিমদের প্রতি বৈষম্য রয়েছে।
যদিও কেন্দ্রে দাবি, তারা আশপাশের দেশের ‘‘নিপীড়িত” সংখ্যালঘুদের সাহায্যার্থে দায়বদ্ধ।
এই প্রথম মেহবুবা মুফতির কন্যা সরকারকে মুসলিমদের বিরোধাচরণ করার জন্য দায়ী করলেন তা নয়। জম্মু ও কাশ্মীরের ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস’ তুলে নেওয়ার পর জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর টুইটারেও তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে।
তিনি লিখেছিলেন, ‘‘ভারত সরকারের উদ্দেশ্য পরিষ্কার এবং অশুভ। তারা দেশের একমাত্র মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্যের জনতত্ত্ব বদলে নিতে চায়। মুসলিমদের শক্তি এতটাই তারা খর্ব করে দিতে চায় যাতে তারা নিজেদের দেশেই দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে থাকে।”
গত ৫ আগস্ট থেকে মেহবুবা মুফতি, ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লা ও তার পুত্র ওমর আবদুল্লাকে আটক করে রাখা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার জানা যাচ্ছে না, কবে তাদের মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলের লক্ষ্য ছ’টি সম্প্রদায়কে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া। হিন্দু, ক্রিশ্চান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি— অন্য দেশের এই ছয় ধর্মাবলম্বী যে মানুষরা কোনও বৈধ নথিপত্র ছাড়া এদেশে আসবেন, তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই এই বিল।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মঙ্গলবার এই বিল সম্পর্কে বলেন, ভারতের তিন প্রতিবেশী দেশ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। ফলে সেখানে কেবল অ-মুসলিমরাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হন।