দর্পণ ডেস্ক : এস্তোনিয়া ইউরোপে শিক্ষার নতুন ‘পাওয়ার হাউজ’ হয়ে উঠেছে। দেশটি শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্রিটেনসহ ইউরোপের বড় বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে পেছনে ফেলে মাথা ফুঁড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব শিক্ষা বিষয়ক পরীক্ষায় প্রভাব বিস্তারে এমন সাফল্য দেখাচ্ছে দেশটি। এমন পরীক্ষার নাম দেয়া হয়েছে ‘পিসা’ টেস্ট। এ পরীক্ষায় ১৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতার পরিচয় দেয়। পড়াশোনার মধ্য দিয়ে গণিত ও বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে তারা বাস্তব জীবন সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান বের করে। ২০০০ সাল থেকে সেখানে এই পরীক্ষা চালু করেছে ওইসিডি। এতে অংশ নেয় মধ্যম ও উচ্চ আয়ের দেশগুলো।

২০১৬ সালে প্রকাশিত পিসা পরীক্ষার ফলে এস্তোনিয়া বিজ্ঞানে তৃতীয় অবস্থান দখল করে। আর ব্রিটেন স্থান পায় ১৫তে। রিডিংয়ে এস্তোনিয়ার অবস্থান ছিল ৬ষ্ঠ। এক্ষেত্রে ব্রিটেনের অবস্থান ছিল ২২তম। বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো গড়ে যে পরিমাণ অর্থ খরচ করে তার চেয়ে বেশি অর্থ খরচ করে ব্রিটেন। কিন্তু এই ধারাটি বাল্টিক রাজ্য বলে পরিচিত এই ছোট্ট দেশ এস্তোনিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। খুব অল্প বয়সে উচ্চ মানের পড়াশোনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে এস্তোনিয়া।

দেশটির রাজধানী তাল্লিন। সেখানকার কেলমিকুলায় কিন্ডারগার্টেনে পড়াশোনা করে অনেক শিশু। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সী শিশু হলো ৬ বছরের। এমনই একটি শিশু রয়েছে ক্রিস্টিন তালভিক এবং এলভিরা উস্তালুর। এর অর্থ হলো ওই শিশুরা মাত্র সাত বছর বয়সে বাধ্যতামূলক স্কুলিংয়ে যেতে বাধ্য আগামী বছর থেকে। তাই তারা যাতে সেজন্য প্রস্তুতি নিতে পারে এজন্য পিতামাতারা নির্ভর করেন কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার ওপর। ক্রিস্টিন বলেন, শিক্ষাটা খুব দ্রুতগতির হতে হবে। তাই কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শিক্ষক বা শিক্ষিকার প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে বাচ্চাকে। তাকে হাত তুলতে হবে। মনের ভিতর যাতে কোনো জড়তা না থাকে তেমন সাহসী হতে হবে। তার চেয়ে বড় কথা হলো শিশুকে সমাজে চলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। এস্তোনিয়ার প্রায় প্রতিটি শিশু মাত্র তিন বছর বয়সে, কেউ কেউ তারও আগে কিন্ডারগার্টেনে ছুটে যায়। এজন্য ক্রিস্টিন এবং এলভিরার মতো মাকে মাসে প্রতিটি শিশুর পেছনে খরচ করতে হয় ৮০ ইউরো। এর সর্বশেষ ফল প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।