পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেসক্লাবে ’আসল’, ’ভুয়া’
মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।  গত ২৩ ও
২৬ নভেম্বর এ পৃথক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার (২৬নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে হাফিজুর রহমান
বলেন, ’৭২৭ নং গেজেটর ম-৯৪০৮৫ নং সাময়িক সনদপত্র ধারী প্রকৃত
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ২০০৬ সাল থেকে ৪৮ নং বইয়ের মাধ্যমে কলাপাড়া সোনালী
ব্যাংক থেকে তিনি ভাতা উত্তোলন করেছেন। কিন্তু কলাপাড়ার জনৈক হাফিজ
মোল্লার সাথে তার নাম ও পিতার নামের মিল থাকায় হাফিজ মোল্লার মেয়ে পরিচয়ে
লাইলী বেগম নামের এক নারী তাকেসহ তার পরিবার এবং কলাপাড়া মুক্তিযোদ্ধা
কমান্ডের মুক্তিযোদ্ধাদের জড়িয়ে নানা ধরনের বিষোদাগারসহ অপ্রচার
চালাচ্ছেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিককদের ভুল তথ্য দিয়েছেন।
প্রকৃত পক্ষে কলাপাড়ার লতাচাপলি ইউনিয়নের হাফিজ মোল্লা সাময়িক
মুক্তিযোদ্ধা সনদ গ্রহন করে ২১/বি নং বইর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা
উত্তোলন করেন। এনিয়ে বিরোধ সৃস্টি হলে পটুয়াখালী জেলা মুক্তিযোদ্ধা
কমান্ড যাচাই বাছাই শেষে ২০১২ সালে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তাকে
স্বীকৃতি প্রদান করেন।’

হাফিজুর রহমান আরও বলেন,’ নাম ও পিতার নামে মিল থাকায় প্রকৃত
মুক্তিযোদ্ধা হয়েও বারবার সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন। পরিবার নিয়ে
চরম অশান্তি ভোগসহ হুমকির মুখে দিনাতিপাত করছেন।’ সংবাদ সম্মেলনে কলাপাড়া
উপজেলা কমান্ডের মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।


এর আগে গত শনিবার (২৩নভেম্বর) সকালে কলাপাড়া প্রেসক্লাব মিলনায়নতে
অনুষ্ঠিত অন্য এক সংবাদ সম্মেলনে মৃত মুক্তিযোদ্ধা হাফিজর রহমান মোল্লার
বড় মেয়ে লাইলী বেগম বলেন, ’তার বাবা হাফিজুর রহমান একজন প্রকৃত
মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী গ্রামে তাদের বাড়ি।
হাফিজুর রহমানের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের গেজেট নম্বর ৭২৭ ও
সনদপত্র নম্বর ১৫০৮৬৪। গেজেট বইয়ের পৃষ্ঠা নম্বর ৭১৯০, তারিখ ৮-১১-২০০৪।
জীবদ্দশায় ২০০৭ সাল থেকে তিনি নিয়মিত ভাতা তুলে আসছিলেন। ভাতার বই নম্বর
৩১/বি। ২০১১ সালের ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত ভাতা তুলেছেন। একটি মামলায় হাজতে
থাকাকালীন মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান ২০১২ সালের ৬ আগস্ট মারা যান,
হাজতী নম্বর ৯১২/১২। এরপরেই শুরু হয় জালিয়াতি।’

লাইলির দাবী, ’তার বাবার গেজেট নম্বর এবং ভাতার বইয়ের সবকিছু ঠিকানাসহ
অবিকল রেখে এখন পর্যন্ত কলাপাড়া থেকে মুক্তিযোদ্ধার সকল ভাতাদি উত্তোলন
করে আসছেন। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তার সন্তানদের স্কুল ও পুলিশে চাকরি
দিয়েছেন ওই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা।’ এসময় লাইলির স্বামী শ্রমজীবী শহিদুল
ইসলাম ও শিশু সন্তান উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধাসহ তাদের পরিবারের এমন পাল্লাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনে
নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। কে আসল আর কে ভুয়া? এটি যাচাই করা
এখন সময়ের দাবী হয়ে উঠেছে।