দর্পণ ডেস্ক : আগামী বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের সবক’টি আসনেই তারা প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। কোনওরকম রাখঢাক না করেই জানিয়ে দিল আসাদুদ্দিন ওয়াইসির দল মজলিস-ই-মুত্তেহাদিন মুসলিমিন (মিম)।
মিমের মুখপত্র অসীম ওয়াকার বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি গ্রামেই আমাদের অস্তিত্ব আছে। আমরা ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। এই প্রথমবার আমরা পশ্চিমবঙ্গে কোনও নির্বাচনে লড়ব, আর আমাদের ভাবনা হল প্রতিটি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা।”
বিহারের কিষাণগঞ্জ আসনে বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে মিম। বাংলা লাগোয়া কিষাণগঞ্জ আসনে জয়ের পরে এখন তাদের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যেই এই রাজ্যের মুসলমানদের অবস্থা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিয়েছেন ওয়েইসি।
হায়দরাবাদের এই দল ক্রমেই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তিনি জনসভায় নাম না করে ওয়েইসসির দলকে আক্রমণও করেছেন। তারই জবাবে রাজ্যের মুসলমানদের অবস্থার কথা বলেন ওয়াইসি। রাজ্যের ২৯৪ আসনে এবার তারা প্রার্থী দিলে মুসলমান ভোট ভাগ হয়ে যেতে পারে, তাতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের যতটা ক্ষতি, বিজেপির ঠিক ততটাই লাভ।
ওয়াইসি স্পষ্ট ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, “ভোটের কথা ভেবে মুসলমানদের তোষণ করা বন্ধ করুন।” তাঁর কথার জের টেনেই ওয়াকার বলেন, “আমরাই একমাত্র দল যারা মুসলমানদের সত্যিকারের অধিকার দেওয়ার জন্য লড়াই করছি।” তিনি দাবি করেন, ইতিমধ্যেই রাজ্যের তৃণমূল স্তরে তাদের দল ছড়িয়ে পড়েছে, এবার তারা ভিত প্রস্তুত করতে চায়।
গত লোকসভা নির্বাচনে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ধর্মের ভিত্তিতে ভোটের বিভাজন ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। এ রাজ্যে বিজেপির ভিত্তি হিন্দু ভোট, উল্টোদিকে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের মূল ভিত্তি মুসলমান ভোট। রাজ্যের যে সব আসনে তৃণমূল কংগ্রেস জিতেছে মূলত মুসলমান ভোটব্যাঙ্কের উপরে নির্ভর করে, তৃণমূলের সেই সব ভোট মিমের দিকে চলে গেলে সমস্যা হবে তৃণমূল কংগ্রেসেরই। সেক্ষেত্রে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখতে পারলে বিজেপির অনেক আসনে জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। তাই পশ্চিমবঙ্গে মিমের বাড়বাড়ন্ত হলে তৃণমূলের ভয় পাওয়া স্বাভাবিক।
ইতিমধ্যে কোচবিহারে পোস্টারও পড়েছে মিমের। যেখানে তারা বলেছে, ‘অপেক্ষা শেষ, এবার লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ’।