গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়া পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম
জেটিতে অত্যাধুনিক মোবাইল হারবার ক্রেনের মাধ্যমে পন্য ওঠা নামার
কার্যক্র শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পায়রাবন্দরের আন্ধারমানিক
নদীতে ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮০ মিটার দৈর্ঘ্য ২৪ মিটার প্রস্থ নির্মিত
সার্ভিস জেটি এবং ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে জার্মান থেকে ক্রয়করা ৬৪ টন লিফটিং
ক্ষমতা সম্পন্ন অত্যাধুনিক মোবাইল হারবার ক্রেনের মাধ্যমে পায়রা বন্দরের
পন্য খালাসের কার্যক্রম শুরু করা হয়। প্রথম দিনে পায়রা বন্দরের
ক্যাপিট্যাল ড্রেজিংএ নিয়োজিত বেলজিয়াম ভিত্তিক কোম্পানী জানডেনুল এর
পন্য খালাসের মাধ্যমে পায়রা বন্দরের জেটি ও ক্রেন সচল হলো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এস,এম ইমতিয়াজ ইসলাম, সুপারিনটেনডেন্ট (লাইটার এন্ড
মুরিং), লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোস্তাফিজুর রহমান-উপ-পরিচালক নিরাপত্তা,
মো. সোহেল মীর- উপ-পরিচালক নিরাপত্তা এবং মো. আসাদুল্লা আশি- সহকারী
প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের
১৯ নভেম্বর পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ
প্রকল্পটিকে ফাস্ট ট্রাক প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। সার্বিক উন্নয়ন
কার্যক্রমকে ১৯টি কম্পোনেন্টে বিভাজন করা হয়। যেখানে দেশের জিটুজি
অর্থায়ন এবং সরকারি বেসরকারি অংশিদারিত্ব পিপিপি ভিত্তিতে এর বাস্তবায়ন
চলছে। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট সীমিত পরিসরে পায়রা বন্দরের নৌপথে বাণিজ্যিক
জাহাজ হতে লাইটার জাহাজে পণ্য খালাসের মধ্য দিয়ে অপারেশনাল কার্যক্রমের
উদ্বোধন করেন প্রধান মন্ত্রী। পায়রা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন ৩৫টি
জাহাজের পন্য খালাসের মাধ্যমে ১১০ কোটি টাকা পায়রা বন্দরের রাজস্ব আয়
হয়েছে।
পায়রা বন্দরের সুপারিনটেনডেন্ট (লাইট এন্ড মুরিং) এসএম ইমতিয়াজ ইসলাম
জানান, শেখ হাসিনার স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মান এবং ভিশন ২০২১
বাস্তবায়নে গৃহীত ১০ ফাস্ট ট্রাক প্রকল্পের মধ্যে দেশের তৃতীয় সমুদ্র
বন্দর অন্যতম। বর্তমানে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং অপারেশনাল কাজ দ্রুত
এগিয়ে চলছে। তার ধারাবাহিকতায় পায়রা বন্দরের জেটি এবং ক্রেনের অপারেশন
শুরু হয়েছে। এছাড়াও বন্দরের কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে ৩০টন
ক্যাপাসিটির একটি মোবাইল হাইড্রোলিক ক্রেন এবং ২৫ টন ক্যাপাসিটির ফর্ক
লিফট। ক্রেনটির মাধ্যমে হুক, গ্রাব এবং স্পিডার এই তিন ধরনের অপারেশন করা
হচ্ছে। এছাড়াও ডিআইএসএফ প্রকল্প, কোল টার্মিনাল প্রকল্প, ফাস্ট টার্মিনাল
প্রকল্প, মাল্টিপারপাস টার্মিনাল এবং বেলজিয়াম ভিত্তিক কোম্পানী জান ডি
নুল এর মাধ্যমে বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান
আছে।
পায়রাবন্দরের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় পন্য আমদানী ও রপ্তানীর মাধ্যমে
পটুয়াখালী, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিল্পায়ন এবং
বানিজ্যিক প্রসার ঘটবে যার ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে দ্রুত সমৃদ্ধশালী
হয়ে উঠবে বলে আশা করেন এসএম ইমতিয়াজ ইসলাম।