বুয়েট ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে শুক্রবার বেলা দুইটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে উপস্থিত হয়ে জবাবদিহি করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বুয়েটের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে এই আলটিমেটাম দেন এবং আবরার হত্যার বিচারসহ তাদের ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন।

এসব দাবিতে শিক্ষার্থীরা এখন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করছেন।

শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হলো আবরারের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত খুনিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা ও বুয়েট ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা।

সকাল ১০টার পর থেকেই শহীদ মিনারে হাজারখানেক শিক্ষার্থী এসে জড়ো হন। তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে তারা স্লোগান দিতে থাকেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের দাবি পূরণে বুয়েট প্রশাসন কোনো চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

চতুর্থদিনের মতো বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে দুই থেকে তিনজন মুখপাত্র কথা বলেন। তারা বলেন, দাবি পূরণ না হলে আগামী ১৪ অক্টোবর ভর্তিও পরীক্ষাও হবে না। এক্ষেত্রে ভর্তি কাউন্সিলকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বলেন তারা।

আবরার নিহত হওয়ার পর ৩০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বুয়েট উপাচার্য সাইফুল ইসলাম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আসেননি।

পরে যখন আসেন, তখন তিনি আন্দোলনরতদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, উপাচার্য আমাদের মধ্যে এলেও আমাদের কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করব, ভিসি স্যার কাল (শুক্রবার) দুইটার মধ্যে আমাদের মধ্যে আসবেন, তিনি সবার সঙ্গে কথা বলবেন। যদি তা না হয়, তাহলে বুয়েটের সব বিল্ডিংয়ে তালা ঝুলবে।

গত মঙ্গলবার উপাচার্য সাইফুল ইসলাম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এসে নীতিগতভাবে তাদের দাবির সঙ্গে একমত জানালেও তখনকার আট দফা মেনে নেয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা দেননি। এতে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা বন্ধসহ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন আন্দোলনরতরা।

পরদিন (বুধবার) শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি বাড়িয়ে ১০টি করেন। এগুলোর মধ্যে একটি ছিল ১১ অক্টোবরের মধ্যে শেরে বাংলা হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বেঁধে দেয়া সময়ের আগে ওইদিনই পদ ছাড়েন প্রাধ্যক্ষ জাফর ইকবাল খান।

কিন্তু বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাননি, তাই তাদের দাবি দশটিই থাকছে।

রোববার গভীর রাতে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরারের লাশ উদ্ধারের পর থেকে উত্তাল বুয়েট।