দিবাকর সরকার, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীরকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেছে। পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছে, চেয়ারম্যানকে মিথ্যা অপবাদে অভিযুক্ত করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১১ টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চাকামইয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীরের কণ্যা চাঁদনী আক্তার। এ সময় তাঁর মামা, টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ আখতারুজ্জামান কোক্কা, চাকামইয়া ইউপি চেয়ারম্যানের পুত্র মো. হাসিবুল হাসান, ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম, মো. মোখলেসুর রহমানসহ ইউপি সদস্যবৃন্দ ও ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

চাঁদনী আক্তার তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, চাকামইয়া ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবনে বসে ঈদ উল আজহার বিশেষ বরাদ্দের চাল বিতরণ চলছিল। চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি ইউপি সদস্যদের চাল বুঝিয়ে দেন। প্রত্যেক ব্যক্তিকে ১৫ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। আজিজুল হক বুদাই নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই এলাকার জালাল চাহরের বাড়ি থেকে চাল উদ্ধার করেন। এ বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া চাল আত্মসাৎ করা বা চুরি করা চাল নয়। জালাল চাহরের পারিবারিক ভিজিডির এবং মৎস্য কার্ডের চাল। যার উপযুক্ত রেকর্ড প্রমান রয়েছে।
চাঁদনী আক্তার আরও বলেন, বিগত উপজেলা নির্বাচনে আমার মেঝ মামা সৈয়দ আখতারুজ্জামান উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধীতা করেন। আমার বাবা ও চাকামইয়া ইউপি চেয়ারম্যান চাকামইয়া ইউনিয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হুমায়ুন কবীর নৌকার পক্ষে কাজ না করে আমার মামার পক্ষে কাজ করেন। নৌকা প্রার্থীর বিপক্ষ করায় উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে একটি বিরোধী চক্র আমার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনও কোনো কিছু যাচাই না করে আমার বাবাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গ্রেপ্তার করেন। আমার বাবার ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। তা ছাড়া তাঁর শরীরে অস্ত্রপঁচার করা হয়েছে। জেলে থাকায় সে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাঁকে দ্রুত মুক্তি না দিলে তাঁর বড় রকমের ক্ষতি হতে পারে।

গত বুধবার দুপুরে চাকামইয়া ইউপি চেয়ারম্যানকে ইউনিয়নের দিত্তা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় পূর্ব চাকামইয়া গ্রামের দ্বিত্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন জালাল চাহরের বাড়ি থেকে ৩০ কেজি করে ১৪টি বস্তা এবং ৫০ কেজি করে ৪টি বস্তায় প্রায় ৫৫০ কেজি ভিজিএফ চাল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া জালাল চাকরের বাড়ির পুকুর থেকে আরো ৮টি খালি বস্তা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় কলাপাড়া থানায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার অন্য আসামীরা হচ্ছে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন গাজী, মো. জালাল চাহর, মো. জামাল হাওলাদার এবং গিয়াস মাতবর।

কলাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ বাদি হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় মামলাটি দায়ের করেন।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, ভিজিএফ চাল বিতরণের মাস্টার রোল সম্পন্ন হওয়ার পর চাকামইয়া ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দকৃত চাল উদ্ধার করা হয়েছে। চাল নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি এখানে স্পষ্ট। বিষয়টিকে এখন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে।