অনলাইন ডেস্ক : প্রসূতির জরায়ুর বাইরে বাড়ছিল দ্বিতীয় সন্তানের ভ্রূণ! কিন্তু বুঝতেই পারনেনি সেই ভ্রূণ বাড়ছে না গর্ভে, বেড়ে উঠছে প্রথম সন্তান প্রসবের সময় সিজারের সেলাই বরাবর! প্রাণঘাতী এই পরিস্থিতি যখন ধরা পড়ে, ততো দিনে প্রসূতির পেটের ভিতরে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায় প্রবল ভাবে।
প্রাণ সংশয় হলেও খড়্গপুরের ইতিশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়কে অবশ্য ফিরিয়ে এনেছেন ভারতের কলকাতার সিএমআরআই হাসপাতালের চিকিৎসকরা। অপরিণত ভ্রূণ বের করে প্রাণ রক্ষা করা হয়েছে বিরল ‘এক্টোপিক স্কার প্রেগন্যান্সি’র শিকার ইতিশ্রীর। প্রথম সন্তানের ছ’বছরের মাথায় দ্বিতীয়বার গর্ভধারণ করেছিলেন ইতিশ্রী(৩১)। প্রথমে আপাত ভাবে সব ঠিকই ছিল। মাঝে মধ্যে রক্তপাত হলেও এড়িয়ে গিয়েছিলেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। সমস্যা হঠাৎ বেড়ে যায় গর্ভাবস্থার ১১ সপ্তাহের মাথায়। এপ্রিলের মাঝামাঝি হঠাৎ তলপেটে প্রবল ব্যথা শুরু হয় ওই প্রসূতির। ১৮ এপ্রিল শুরু হয় রক্তপাত। তড়িঘড়ি নিজের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে ছুটে যান প্রসূতি।
ইতিশ্রীর স্বামী, বেসরকারি সংস্থার কর্মী রুদ্রপ্রতিম গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘চিকিৎসক দেখেই জানান, উপসর্গ ভালো নয়।আলট্রাসোনোগ্রাফির পরে ট্রান্স ভ্যাজাইনাল স্ক্যান (টিভিএস)-এ গত ২৩ এপ্রিল এক্টোপিক স্কার প্রেগন্যান্সি ধরা পড়ে।
জরায়ুর বাইরে স্ত্রী জননতন্ত্রের যেকোনও অংশে ভ্রূণ বেড়ে উঠতে থাকলে তাকে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বলে৷ শতকরা ২ জন প্রসূতির এমন গর্ভাবস্থা দেখা যায়।
চিকিৎসকেরা জানান, সঠিক সময়ে ভ্রূণ বের করা না হলে এতে প্রসূতির মৃত্যু অনিবার্য। সিএমআরআই-এর স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ এসএম রহমান বলেন, ‘এক্টোপিক স্কার প্রেগন্যান্সি হল বিরলের মধ্যেও বিরলতম। যে প্রসূতিদের আগে সিজারিয়ানের মাধ্যমে বাচ্চা হয়েছে, তাদের ওই সেলাইয়ের উপরেই প্লাসেন্টা এসে বসে এবং ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ভ্রূণ। মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য, এই সময়।