
দর্পণ ডেস্ক : শুক্রবার প্রথম বাজেটে ধনীদের জন্য করের পরিমাণ বাড়ালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, পাশাপাশি জ্বালানি, সোনা ও অটোমোবাইল যন্ত্রাংশের ওপর শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি করলেন তিনি। পাঁচ বছরে বৃদ্ধির হার কম হওয়ার ধাক্কা সামাল দিতে এবং রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়াতে এই পদক্ষেপ করলেন অর্থমন্ত্রী।
বিনিয়োগ টানতে বিমা এবং বিমানের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের রাস্তা খুলে দিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। পাশাপাশি কমানো হল কর্পোরেট করের পরিমাণও। লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক জয়ের পর, ২০২৪-২০১৫ এর মধ্যে ভারতের অর্থনীতিকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে দিতে চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে প্রত্যাশা সত্ত্বেও সরকারি খরচের ক্ষেত্রে বড় কোনও পদক্ষেপ করল না কেন্দ্র।
চলতি বছরে রাজস্ব ঘাটতির হার জিডিপির ৩.৩ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখার কথাও বলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ভারত প্রকল্পের জন্য। শিক্ষাক্ষেত্রে “বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান” গড়ে তুলতে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, এই বরাদ্দও ২০১৮-১৯-এর সংশোধিত বরাদ্দের প্রায় তিনগুণ।
রাজস্ব ঘাটতির হার ২০১৯-২০২০ অর্থবর্ষে ৩.৪ থেকে কমিয়ে ৩.৩ শতাংশ করা হয়েছে, অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আগামীদিনে এর পরিমাণ আরও কমবে।
সিঙ্গল ব্র্যান্ড রিটেলের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের নিয়ম শিথিল করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার, এছাড়াও বিমান, বিমা, মিডিয়া এবং অ্যানিমেশনের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের দরজা খুলে দিল কেন্দ্র, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্টে ঋণের ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্যও দরজা খুলে দিল সরকার।
ধনীদের জন্য সারচার্জের পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কর দেওয়ার ক্ষেত্রে ২ কোটি থেকে ৫ কোটি এবং ৫ কোটির বেশী আয়ের ক্ষেত্রে কার্যকরী কর হবে ৩ এবং ৭ শতাংশ।
বার্ষিক ৪০০ কোটির মধ্য লেনদেনের কর্পোরেট সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে করের পরিমাণ ২৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে। এর ফলে ০.৭ শতাংশ সংস্থা ২৫ শতাংশ কর কাঠামোর বাইরে থাকবে।
আধারকার্ড অথবা প্যান কার্ড ব্যবহার করে এবার থেকে আয়কর দাখিল করা যাবে, কর আদায়ের সুবিধা এবং করদাতাদের সুবিধার জন্যই এই পদক্ষেপ।
এবার থেকে পৌঁছান মাত্রই আধারকার্ড পাবেন এনআরআই-রা। ভারতীয় পাসপোর্ট দেখালেই মিলবে আধারকার্ড। আধার কার্ড পেতে এনআরআই-দের এখন ১৮০ দিন থাকতে হয়।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে চলতি অর্থবর্ষে ৬২,৬৫৯.১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে. যা বিগত দুটি অর্থবর্ষের তুলনায় সবচেয়ে বেশী।তার মধ্যে ৬,৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের জন্য। শিক্ষাক্ষেত্রে “বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান” গড়ে তুলতে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, এই বরাদ্দও ২০১৮-১৯-এর সংশোধিত বরাদ্দের প্রায় তিনগুণ।
পেট্রোল এবং ডিজেলে লিটার প্রতি অতিরিক্ত ২ টাকা শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। সোনা বা অন্যান্য সৌখিন ধাতব সামগ্রীর আমদানিতে শুল্কের পরিমাণ ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২.৫ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২২-এর মধ্যে সমস্ত গ্রামীণ পরিবারে বিদ্যুৎ এবং পরিচ্ছ্ন্ন খাবার তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বাজেটে। আগামী পাঁচ বছরে ৮০,০০০ কোটি টাকা ব্যায়ে ১.২৫ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন ঘটানো হবে বলেও ঘোষণা করা হয়েছে বাজেটে।
কর কাঠামো অপরিবর্তিত রেখে কেন্দ্র ঘোষণা করেছে, ২০২০-এর মার্চের মধ্যে যাঁরা ৪৫ লক্ষ টাকার মধ্যে ঋণ নেবেন, তাঁদের সুদের মোট অঙ্ক থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা কমিয়ে দেওয়া হবে। এর ফলে আগামী ১৫ বছরে প্রায় ৭ লক্ষ পরিবার এতে উপকৃত হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।