গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মানাধীন পায়রা ১৩২০
মেগাওয়াট তাপবিদ্যুত কেন্দ্রে ১৫ দিন পর বাঙালী শ্রমিকরা কাজে যোগ
দিয়েছে। এতে কর্মমুখর হয়ে উঠেছে বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকা। বুধবার কাজে যোগ
দেয়া ৩০৮ বাঙালী শ্রমিকের সেফটি প্রশিক্ষণ ও পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চায়না শ্রমিকদের সাথে
তারা কাজ শুরু করেছে।
বিসিপিসিএল কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকায় ১২টি ম্যান পাওয়ার
এজেন্সিকে শ্রমিক সরবরাহের জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। নর্থ ইস্ট (নম্বর-১)
ইলেক্ট্রিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন লিমিটেড (এনইপিসি) কর্তৃপক্ষ
পর্যায়ক্রমে আরও এজেন্সিকে শ্রমিক সরবরাহের অনুমতি দেবে। কাজে যোগ দেয়া
শ্রমিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
বিসিপিসিএল’র জুনিয়র এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহ মনি জিকো জানান, ’এখন
পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্র চীনা ও বাঙালী শ্রমিকের পদভারে মুখরিত। তারা
সমন্বিতভাবে বিদ্যুত প্লান্টের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত।’
নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব রেজওয়ান ইকবাল খান জানান, ’বাংলাদেশি শ্রমিকদের
জাতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করে তা নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হচ্ছে, যাতে
কেউ ভূয়া পরিচয় পত্র দিয়ে এখানে কাজ করতে না পারে। এতগুলো শ্রমিকের যাচাই
বাছাই করা যেহেতু একটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার তাই আমাদের নির্ধারিত সময়ের
মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচিত কিছু সংখ্যক শ্রমিকদের আজ কাজে
যোগদান করানো হয়েছে। ৩০৮ জন বাংলাদেশী শ্রমিক পূর্বের মত সেফটি ড্রিল
প্রশিক্ষণ শেষে চাইনিজদের সাথে একযোগে কাজ শুরু করেছে।’
গত ১৮ জুন পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের অভ্যন্তরে এক বাঙালী শ্রমিক নিহতের
ঘটনায় সৃষ্ট সংঘর্ষে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে এক চায়না প্রকৗশলী মারা যায়।
এ ঘটনার পর থেকে বিদ্যুত কেন্দ্রে বাঙালী শ্রমিকদের ১৫দিনের ছুটি ঘোষনা
করা হয।
এদিকে বিদ্যুত কেন্দ্রে শ্রমিক সরবরাহকারী ম্যান পাওয়ার এজেন্সির কিছু
কর্মকর্তা রোহিঙ্গা শ্রমিকদেরও এখানে কাজের সুযোগ করে দিয়েছিলো। ব্যক্তি
লাভবান হতে তারা এ কাজ করলেও বিদ্যুত কেন্দ্রে হামলা,ভাংচুর ও লুটপাটের
ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এমনকি যে দোভাষীরা
বিদ্যুত কেন্দ্রে চায়না ও বাঙালী শ্রমিকদের মধ্যে ভাষা ও তথ্য আদান
প্রদানের কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধেও কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
মূলত দোভাষীরা বাঙালী শ্রমিকদের কোনঠাসা করে রাখায় অনেক বাঙালী শ্রমিক
সঠিক কাজ কারলেও চায়না শ্রমিক ও প্রকৌশলীদের ভুল তথ্য দেয়ায় বিদ্যুত
কেন্দ্রের অভ্যন্তরে একাধিক অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। বাঙালী শ্রমিকরা
নিগৃহীত হলেও ম্যান পাওয়ার এজেন্সীর মালিক ও দোভাষীরা তাদের কাজ থেকে
তাড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের উপর হয়রানীর ষ্টিমরোলার চালাচ্ছে।