দর্পণ ডেস্ক : গত সপ্তাহে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রাজ্যপাল এবং বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা পালা করে দেখা করতে আসছেন তার সঙ্গে। রকমসকম দেখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের  আমলাদের মনে হচ্ছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যেন এখন ক্ষমতার নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

মোদি  মন্ত্রিসভার প্রথম বারে এ রকমই ক্ষমতার কেন্দ্র ছিল অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির মন্ত্রক। এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নিয়েছে  সেই জায়গা। একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তালিকায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন থেকে শুরু করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল,পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের মতো নাম রয়েছে বলেই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।

সকলেই অবশ্য বলেছেন নেহাতই সৌজন্যের খাতিরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এসে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। রেলমন্ত্রী বলেছেন আমি কফি খেতে এসেছিলাম। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বললেন আমি এসেছিলাম চা আর বিস্কুট খেতে। তবে ধর্মেন্দ্র স্পষ্ট করেই জানান বিজেপি সভাপতির সঙ্গে দলের নেতারা দেখা করতে আসবেন এটাই স্বাভাবিক।

আমলারা পরিবর্তনটা বুঝতে পারছেন। তারা বলছেন মোদি মন্ত্রিসভা দ্বিতীয় বার শপথ নেওয়ার পর এই প্রথম মন্ত্রীরা এভাবে বৈঠক করলেন। যখন রাজনাথ সিং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতেন তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত  নয় এমন বিষয় নিয়ে বৈঠক সেভাবে হতো না বললেই চলে। রাজনাথ এখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সামলাচ্ছেন। গত মন্ত্রিসভার শেষ কয়েক বছর প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন নির্মলা সীতারমণ। এবার তিনি অর্থ মন্ত্রকের শারীরিক অসুস্থতার কারণে মন্ত্রিসভার অংশ হতে চাননি অরুণ জেটলি। তাই নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে নির্মলাকেই বেছে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমলারা পরিবর্তনের কথা বললেও দলের অন্দরে খবর প্রধানমন্ত্রী র নির্দেশেই বৈঠক করছেন বিজেপি সভাপতি।

গত দু’বছরে নির্বাচন সহ নানা কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার গতি কিছুটা  কমেছে। কিন্তু এবার নতুন ভাবে কাজ  শুরু হচ্ছে আর সেই কারণেই নিজের  দীর্ঘদিনের সঙ্গী বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে  মন্ত্রিসভায় নিয়ে এসেছেন মোদি। ২০১৪ সালে বিজেপির সরকার তৈরি হওয়ার সময়ও অমিতের মন্ত্রী হওয়ার একটা সম্ভবনা দেখা দিয়েছিল। সে সময় বিজেপি সভাপতি  জানান এই দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি প্রস্তুত  নন। বছর দুয়েক আগে  রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার সময়ও  মন্ত্রী হওয়া প্রসঙ্গে তেমন  একটা আগ্রহ দেখাননি অমিত।

তবে  এবার তিনি মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। দেশের  ইতিহাসে সবচেয়ে বলিষ্ঠ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে  সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল চিহ্নিত হয়ে আছেন। পরে লালকৃষ্ণ আদভানিও সেই চেষ্টা করেছেন। এবার  অমিত কী করেন সেটাই দেখার?