দর্পণ ডেস্ক : বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণের পর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণি পেশার মানুষ।
আজ (শুক্রবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিভিন্ন কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানায় তারা। গত ৬ মে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে স্বর্ণলতা পরিবহনের চলন্ত বাসে ইবনে সিনা হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণ শেষে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
তানিয়াকে গণধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকাস্থ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া সম্মিলিত যুব পরিষদ।
এ সময় বক্তারা বলেন, শুধু কিশোরগঞ্জের বাসে এই বর্বরতায় নয়, সারাদেশেই নারী-শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই খুন-ধর্ষণ-অপহরণ-নির্যাতনের ঘটনা। নির্যাতনের ঘটনা বীভৎসতায়, বর্বরতায় আগেরটিকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। আমাদেরও যেন গা সওয়া হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, তানিয়ার গণধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-নারী সেল ও সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম।
বক্তারা বলেন, চলন্ত বাসে নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণ শেষে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই নৃশংস বর্বরতার সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যাতে এমন অপরাধে আর কেউ জড়াতে সাহস না পায়।
তারা আরও বলেন, নারী-শিশু নির্যাতন এতো ভয়াবহ মাত্রায় আসার একটি অন্যতম কারণ বিচার না হওয়া। এরআগে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর কলেজছাত্রী রুপা হত্যা মামলা এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। আসামিদের ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হয়নি। ৩ বছরেও তনু হত্যা মামলার চার্জশিট হয়নি। এমন অসংখ্য ঘটনায় অপরাধীর সাজা হয়নি। নিষ্পত্তি হওয়া মামলাগুলোর মাত্র ৩ শতাংশের সাজা হয়েছে। যদি দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক সাজা হতো, তাহলে এমন অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো।
এদিকে, একটি বেসরকারি সংস্থা গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চলতি মে মাসের প্রথম ৮ দিনেই ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছে ৪৪ শিশু। আর চলতি বছরের প্রথম তিনমাসে ১৮৯ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এরমধ্যে ১৫ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।
ছয়টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি বলছে, ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা গেছে ৩টি মেয়ে শিশু। আর আহত হয়েছে ৪১ শিশু।