মার্কস মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ছাত্র বাধন মাতব্বরের (২৩) এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদ উর রহমান শুনানি শেষে এ রিমান্ডের আদেশ দেন। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাহেরা খানম আসামিকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট থেকে ভিকটিমকে ফুসলিয়ে অনুরাগ হোটেলের আশেপাশে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে ভিকটিমের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। ভিকটিম টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে আসামি ভিকটিমকে ধর্ষণ করে এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করে। নির্যাতন করে ওই দিন বিকেল ৫টার মধ্যে টাকা না দিলে তার আপত্তিকর ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ও মামলার ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করার জন্য মামলার ঘটনাস্থল শনাক্ত ও ভিকটিমের অশ্লীল ছবির ভিডিও ফুটেজ উদ্ধারের লক্ষ্যে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
অপরদিকে বাধনের পক্ষে তার আইনজীবী নূরে আলম সরকার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে একদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে বাধনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শেকৃবির অ্যাগ্রি বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অনুষদের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেন বাধন। এ সময় ধর্ষণের দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে ওই ধারণকরা দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ছাত্রীর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন।
এ ব্যাপারে শেরেবাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানে আলম মুন্সী বলেন, ভু্ক্তভোগী ছাত্রী বাদী হয়ে মামলা করেন শেরেবাংলা নগর থানায়। বাধন মাতব্বরকে মামলা নাম্বার ৩০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) ধারা ৭/৯ (১), তৎসহ প্যানাল কোড- ৩৮৫/ ৫০৬ মামলার আসামি। আমরা ধর্ষণের অভিযোগে বাধনকে গ্রেফতার করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পরবর্তীতে তাকে আমরা কোর্টে চালান করে দিয়েছি।
এ প্রসঙ্গে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে থানা কর্তৃপক্ষ আমাকে অবহিত করেছিল। আমি বিষয়টি নিয়ে মাননীয় উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলে শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি উপস্থাপন করব।’
অভিযোগ রয়েছে বাধন মাতব্বর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ইতঃপূর্বেও বিভিন্ন মেয়ের সাথে শেরেবাংলা হলের গেস্টরুমে সময় কাটিয়েছেন।