গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় সদ্য সমাপ্ত ৪র্থ ধাপের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের স্বতন্দ্র প্রার্থীআকতারুজ্জামান কোক্কাসোমবার দুপুর ১টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবে নির্বাচন পরবর্তী লিখিত সংবাদ সম্মেলনে ৪০% ভোট কাস্ট না হওয়ায় নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট বন্ধ করে পুন:নির্বাচনের দাবী করেন।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জানান- সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হওয়ায় এবং শতকরা ৩৫.৫২ ভাগ ভোট পড়ে। এসময় তিনি আরও বলেন, উপজেলার চাকামইয়া, ধানখালী, চম্পাপুর, নীলগঞ্জ, বালিয়াতলী, লালুয়া ও ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের অধিকাংশ ভোট কেন্দ্র থেকে তার নির্বাচনী এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। এবং উপরোক্ত ইউনিয়নের সেন্টারগুলোতে ভোট ছিনিয়ে নিয়েছে নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা। এছাড়া নির্বাচন পূর্ববর্তী এবং নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় তার প্রায় অর্ধশত কর্মী-সমর্থক নৌকা প্রতীকের অনুসারীদের হাতে আহত হয়েছে। তন্মধ্যে লতাচাপলি ইউনিয়নে ওমর ফারুক (২১), আ: রহমান (৫২). মুরাদ (১৯), ইউপি সদস্য মিনা রহমান (৩৮), রফিকুল ইসলাম (১৯), ধানখালীতে বশির ঢালি (৪০), টিয়াখালীতে শাহজালাল (৪২), গাজী সুলতান (৩৭) ডালবুগঞ্জে ইদ্রিস খান (৪০), সিদ্দিক খান (৪২), আ: রব ফরাজী (৪২). নাসির মোল্লা (৩৯), ধানখালীতে কবির মৃধা (৪৫), টিয়াখালীতে মিজানুর রহমান (৩৮) অবস্থা গুরুতর। এছাড়া টিয়াখালীর বঙ্গবন্ধু কলোনীতে জুলহাস মোল্লা, হিমু বিশ্বাস, কুদ্দুস দেওয়ান, রফিক ফকির, টিয়াখালী ইউপি সদস্য সোবাহান বিশ্বাস সহ অন্তত: ২০ জনের বাড়ীতে হামলা-ভাঙচুর সহ তাদের খুন-জখমের হুমকী দেয়া হয়েছে। ধানখালীর পাটুয়ায় কবির মৃধার মাছের ঘেরের মাছ জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষ নৌকা প্রার্থীর অনুসারীরা। এমনকি টিয়াখালী বাজার আওয়ামীলীগ অফিস ও মহিপুর আওয়ামীলীগ অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে এবং মহিপুর অফিস দখল করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের যবনিকায় এসবের প্রতিকারে গনমাধ্যমকর্মী সহ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন আকতারুজ্জামান কোক্কা। এসময় অন্যান্যের মধ্যে লাইজু হেলেন লাকী, ইউপি সদস্য মিনা রহমান, সোহেল মীরা, রাজিব তালুকদার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে নৌকা প্রতীকের পক্ষ থেকে নির্বাচনী সহিংসতায় মহিপুর ইউনিয়নে তাদেও কর্মী মুন্না (২২), সগির হোসেন (৩৪), আনোয়ার (৩৮) ও মহিপুর ইউনিয়ন আ’লীগ সম্পাদক নুরুল ইসলাম (৬৮) কে স্বতন্দ্র প্রার্থীর অনুসারীরা রক্তাক্ত জখম করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
কলাপাড়া থানার ওসি মো: মনিরুল ইসলাম জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। মহিপুর থানার ওসি মো: সাইদুল ইসলাম জানান, মহিপুরে সৃষ্ট ঘটনা নির্বাচনী সহিংসতার কোন বিষয় নয়। এসকল বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন ওসি।
প্রসংগত; চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পটুয়াখালীল কলাপাড়ায় নিছিদ্র নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এসএম রাকিবুল আহসান বেসকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৩০৯ ভোট। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের সৈয়দ আখতারুজ্জামান কোক্কা পেয়েছেন ২৬ হাজার ৪৬৪ ভোট। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে শফিকুল আলম বাবুল ৩৬,১৪৮ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।। তার নিকটতম প্রার্থী চশমা প্রতীক নিয়ে মোস্তফা কামাল পেয়েছে ১৯,৫২০ ভোট। তালা প্রতীক নিয়ে নিজাম উদ্দিন নিজাম পেয়েছে ২২৯৬ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাঁস প্রতীক নিয়ে শাহিনা পারভীন সীমা ৩৯,০২৬ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।। তার নিকটতম প্রার্থী ফুটবল প্রতীক নিয়ে উম্মে তামিমা বিথী পেয়েছে ১৪,৩৩৫ ভোট, কলস প্রতীক নিয়ে হেলেন লাকী পেয়েছে ৬০৩৮ ভোট।