দর্পণ ডেস্ক : খ্যাতিমান সংগীত শিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি .. রাজিউন)। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় রাজধানীর বারিধারায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে নিজ বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। স্বামী মেজর (অব.) আবুল বাশার রহমত উল্লাহ ব্যবসায়ী, মেয়ে নাহিদ রহমত উল্লাহ থাকেন লন্ডনে আর ছেলে এ কে এম সায়েফ রহমত উল্লাহ যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করে এখন কানাডায় থাকেন। আজ বাদ জোহর বারিধারায় পার্ক মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বনানীর সামরিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। ১৯৫২ সালে জন্ম নেয়া এ সংগীত শিল্পীর গাওয়া দেশাত্মবোধক গানগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়।

তার গাওয়া এক নদী রক্ত পেরিয়ে, একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে, একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল গান তিনটি বিবিসি জরিপে সর্বকালের সেরা বিশটি বাংলা গানের তালিকায় স্থান পায়। এছাড়া আরেকটি গানের অন্যতম শিল্পীও তিনি। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা আনোয়ার পারভেজের সুরে জয় বাংলা বাংলার জয়। এটা ধরলে তিনি ২০টির মধ্যে ৪টি গানের সাথে যুক্ত। এছাড়াও তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, আমায় যদি প্রশ্ন করে, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়সহ অসংখ্য গান।

পাকিস্তান আমলে রেডিওতে তার নাম বলা হতো শাহনাজ বেগম। মাত্র ১১ বছর বয়সে রেডিও এবং চলচ্চিত্রের গানে তার যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৩ সালে। ১৯৬৪ সালে টিভিতে প্রথম গান করেন। সে হিসাবে সংগীতে তার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হয় ২০১৪ সালে। শাহনাজ রহমত উল্লাহর বড় ভাই সুরকার আনোয়ার পারভেজ। আরেক ভাই নায়ক এবং গায়ক জাফর ইকবাল। এ শিল্পী পাকিস্তানে থাকার সুবাদে করাচি টিভিসহ উর্দু ছবিতেও গান গেয়েছেন। তিনি গান শিখেন গজল সম্রাট মেহেদী হাসানের কাছে। রহমত উল্লাহকে ১৯৯২ সালে একুশে পদক দেয়া হয়। ১৯৯০ সালে ‘ছুটির ফাঁদে’ ছবিতে গান গেয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়া ২০১৬ সালে ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ আয়োজনে আজীবন সম্মাননা, ২০১৩ সালে সিটি ব্যাংক থেকে গুণীজন সংবর্ধনা দেয়া হয় তাকে। এছাড়া গান গেয়ে আরও অসংখ্য পুরস্কার আর সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।