দর্পণ ডেস্ক : শিশুরা ছোট বেলা থেকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। যেটা প্রথম থেকে লক্ষ্য না করলে বোঝা সম্ভব হবে না দিন দিন সে কত সমস্যায় পড়ছে। শিশুর এমন কিছু আচরণ আছে যেটা লক্ষ না করলে বড় হওয়ার পর সমস্যাটা তীব্র আকার ধারণ করবে। যখন বাবা-মায়ের আয়ত্বের বাইরে চলে যাবে। শিশুকে ভরপুর সময় দিন। তাকে বুঝতে চেষ্টা করুন। তার ভেতরকার ছোটখাটো পরিবর্তন কখনও এড়িয়ে যাবেন না। শিশুর প্রতিটা পরিবর্তনের পেছনে থাকতে পারে সমস্যা। যেটা গুরুত্ব না দিলে পরে শিশুকে চরম অনিশ্চয়তায় ঠেলে দেওয়া হবে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাবা-মা বাচ্চার কথা শুনতে চান না। এই ধরনের আচরণকে বলে থাকেন অবাধ্য। সেটা ঠিক নয়। এটা এক ধরনের অসুখ। ভবিষ্যতে তা বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। যেমন, বাচ্চা স্কুলে যেতে চায় না। এটা অনেকে বদমায়েশি বলে ভাবেন। কিন্তু সে যে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে, সেটা বদমায়েশি নাও হতে পারে। এক জায়গায় বসে থাকতে পারছে না, ছটফট করছে। হয়তো কারও গায়ে থুতু দিচ্ছে। এগুলি কিন্তু বদমায়েশি নয়। প্রাথমিক ভাবে এগুলি বদমায়েশি মনে হতে পারে। কিন্তু এগুলি উপেক্ষা করা উচিত নয়।
পরে এগুলিই কিন্তু বড় সমস্যা ডেকে আনতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, ঘুমের মাঝে বাচ্চা আতঙ্কে কাঁপতে শুরু করেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাবা-কাকার ভয়ে তারা এমন করে থাকে। অনেকের ঘুম ঠিক হয় না। ভোর চারটেয় উঠে হয়তো হাঁটতে শুরু করে দেয়। অতীত ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, বাবা-মা তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। সে মানুষ হয়েছে দাদু-দিদার কাছে। প্রথমে দাদু-দিদার কাছে আসতে চায়নি। পরে বাবা-মায়ের থেকে দূরত্ব তৈরি হয়। মানতে শুরু করে। ভুলে যায়। কিন্তু বাবা-মায়ের উপরে যে রাগটা চাপা থাকে তা পরে বড় আকার নেয়। সেই মুহূর্তে সে বাবা-মাকে কিছু করতে পারে না। বয়স বাড়লে রাগ প্রকাশ করে থাকে।
বাবা-মা বাচ্চাদের নানা ভাবে ‘অপমান’ করে থাকেন। বাবা-মা হয়তো অন্যদের সঙ্গে গল্প করছেন। তখন বাচ্চা এলে কঠিন ভাবে তাকে বলা হল, ‘তুমি এখানে আসবে না। চলে যাও।’ এতে সে অপমানিত বোধ করতে পারে। অন্য ভাবে, বুঝিয়ে বললে সে ‘অপমানিত’ বোধ করে না। কিন্তু আমরা তা করি না। ভাবি, সে বাচ্চা। কিছু বোঝে না। বুদ্ধির বিকাশ হয়নি। কিন্তু তা নয়। বড়দের মতোই তার মনে প্রভাব পড়ে। তফাৎ হল, বড়রা ‘রিঅ্যাক্ট’ করে, ছোটরা সেটা মনের ভিতর রেখে দেয়। পরে তার বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়।
বাবা-মায়ের মধ্যে সম্পর্ক শিশুর বেড়ে ওঠার উপরে প্রভাব বিস্তার করে। বাবা-মায়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নয়। মা হয়তো বাবাকে হয়তো দমিয়ে রাখেন। সন্তান মেয়ে হলে সেও ভবিষ্যতে তার নিজের স্বামীর উপরে এমন ব্যবহার করতে চাইবে। বা হয়তো, বাবা মদ খেয়ে মাকে মারধোর করেন। সন্তান ছেলে হলে সে এটা দেখতে দেখতে পরে নিজের স্ত্রী বা বাচ্চার উপরে এমনটা করে থাকতে পারে।