দর্পণ ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ উন্নত জীবন পাওয়ার সম্ভাবনা হারিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা একটি সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। দেশের মানুষ একটি উন্নত জীবন পাবে, এটাই তার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু সে কাজ তিনি করে যেতে পারেননি। ১৫ই আগস্ট তাকে মেরে ফেলা হলো। আমি পরিবার হারালাম, আপনজন হারালাম কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ হারিয়েছিল তাদের স্বাধীনতার চেতনা, উন্নত জীবন পাওয়ার সম্ভাবনা’।
আজ (রোববার) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু মানব দরদি ছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরিবারের সহযোগিতায় বিরাট হৃদয়ের অধিকারী হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধু। এদেশে প্রায়ই দুর্ভিক্ষ লেগে থাকতো, নিজের গোলা খুলে দিয়ে ধান বিলিয়ে দিতেন তিনি। আমার দাদা-দাদি কখনও বকাঝকা করেননি। সবসময় তার ভেতরে মানুষের প্রতি ভালোবাসা ছিল। সেই ভালোবাসার টানেই তিনি আমাদের এই স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছেন’। আজকে আমাদের লক্ষ্য, তিনি যেভাবে দেখতে চেয়েছিলেন উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা; সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
সরকার প্রধান বলেন, তাকে হত্যার পর একুশ বছর বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজানো যেত না। ভাষণ বাজাতে গিয়ে অনেকে জীবন দিয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে আজ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। যা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে ।
এরআগে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১০টা ১৯ মিনিটে প্রথমে প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা গার্ড অব অনার দেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাহেতা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর ছোটমেয়ে শেখ রেহানা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও মোনাজাতে অংশ নেন। পরে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ প্রাঙ্গণে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে মন্তব্য লেখেন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে, সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান তিনি। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আবারও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। এরপর, আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়।