নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টাইচ মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় এ পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে জুম্মার নামাজের সময় হামলার ঘটনা ঘটে।
এ হামলা চালান অস্ট্রেলিয়ার শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ব্রেনটন ট্যারেন্ট। ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান-বংশোদ্ভূত এই শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারী ১৭ মিনিট ধরে ওই হামলার লাইভ ভিডিও প্রচার করেন।
হামলাকারী আল নূর মসজিদের সামনে তার গাড়ি পার্ক করার মধ্যে দিয়ে লাইভস্ট্রিম শুরু হয়। ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলাটি ছিল সুপরিকল্পিত। হামলার আগেই হামলাকারী টুইটারে ৮৭ পাতার ঘোষণাপত্র আপলোড করে হামলার ঘোষণা দেন।
ওই ঘোষণাপত্রে ব্রেনটন জানান, তিনি একটি নিম্নবিত্ত শ্রমজীবী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা-মা স্কটিশ, আইরিশ এবং ইংলিশ ছিল, আমার কোন নিয়মিত শৈশব ছিল না। ২০১১ সালে নরওয়ের অসলোতে ৭৭ জনকে হত্যাকারী আন্ডারস ব্রেভিকের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই সন্ত্রাসী হামলা চালান। ২০১৭ সালে স্টকহোমে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা দ্বারাও সে প্রভাবিত হয়েছে।
এটা করে তিনি অভিবাসী ও ইসলামপন্থি জঙ্গিদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দু’বছর ধরেই হামলা চালানোর পরিকল্পনা করে আসছেন বলে জানিয়েছেন ব্রেনটন। তিনমাস আগেই ক্রাইস্টচার্চে হামলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, একটি আধা স্বয়ংক্রিয় শর্টগান ও রাইফেল দিয়ে সাউথ আইল্যান্ডে আল নূর মসজিদে অন্তত ৫০টি গুলি ছোড়েন ব্রেনটন ট্যারেন্ট।
বর্ণবাদী অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত হামলাকারী নিজেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক বলেও দাবি করেছে। তিনি অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের গ্রাফটন শহরের অধিবাসী। সেখানকার বিগ রিভার জিমে তিনি ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন।জিমটির ব্যস্থাপক ট্রেসি গ্রে বলেছেন, ব্রেনটন টেরেন্ট পড়াশুনা শেষে করে ২০০৯ সালে। এরপর এশিয়া ও ইউরোপ ভ্রমণ করেছেন। সে অসাধারণ কর্মী ছিল। অর্থ ছাড়াই অন্যকে সাহায্য করতেন। ২০১০ সালে ক্যান্সার আক্রান্ত হয় ব্রেনটন টেরেন্টের বাবা মারা যান। তার সংসারে মা ও এক বোন আছে। অস্ত্রে ব্রেনটন টেরেন্টের কোনো আগ্রহ ছিল বলে জানতেন না গ্রেসি। তার ধারণা বিশ্ব ভ্রমণের সময় ব্রেনটন টেরেন্টের মানসিকতার পরিবর্তন আসতে পারে। তিনি আরও জানান, টরেন্টের মতো দয়ালু ব্যক্তি এমন কাজ করতে পারেন তার বিশ্বাসই হচ্ছে না।