দর্পণ ডেস্ক : উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ (সোমবার) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এই ভোট বিরতিহীনভাবে চলবে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

সকাল পৌনে ৮টার আগে হাজী মুহাম্মদ মহসিন হল, মাস্টারদা সূর্য সেন হল, সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও শহিদুল্লাহ হল, জিয়াউর রহমান হল, কবি জসিম উদ্দিন হলসহ কয়েকটি হলে দেখা গেছে, ভোটাররা দলে দলে এসে ভোট কেন্দ্র দাঁড়িয়ে আছেন। ভোটাররা সকাল ৭টার পরপরই কেন্দ্রগুলোতে এসে অবস্থান নেয়। তাঁরা সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট শুরুর অপেক্ষা করে। এর পর সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হলে একে একে ভোটাররা কেন্দ্রে প্রবেশ করে। নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া তথ্যানুসারে, ৪৩ হাজার ২৫৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৬ হাজার ২৯২ জন নারী এবং ২৬ হাজার ৯৬৪ জন পুরুষ ভোটার রয়েছে। আর ডাকসুর ২৫টি পদের বিপরীতে মোট ২২৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিটি হলে নির্বাচিত হবেন ১৩ জন করে। সেই হিসাবে ১৮ হল সংসদে প্রার্থী রয়েছে মোট ৫০৯ জন। তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদে- ভিপি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) পদে ২১ জন, জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ১৪ জন, এজিএস (সহ সাধারণ সম্পাদক) পদে ১৩ জন প্রার্থী রয়েছেন।
এবারের ডাকসুতে প্যানেল দিয়ে নির্বাচন করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাম সংগঠনগুলোর জোট, কোটা আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, স্বতন্ত্র জোট, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগ-বিসিএল, ছাত্র মৈত্রী, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র মুক্তিজোট, জাতীয় ছাত্রসমাজ ও বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন। তবে, ছাত্রলীগ এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করা আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো রয়েছে। আশা করছি আমরা ভালোভাবেই শেষ করতে পারব।’

১৯২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ সৃষ্টির পর এ নিয়ে ৩৬ বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯০ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ১৯৯০-৯১ সেশনের জন্য ভিপি ও জিএস পদে যথাক্রমে নির্বাচিত হন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আমানউল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকন। এরপর আর ডাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি আদালত ৬ মাসের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপিল আদালত সেটি গ্রহণ না করলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভা ২০১৯ মার্চের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঠিক করে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তফসিল প্রকাশ করে।