দর্পণ ডেস্ক : জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের প্রধান নির্বাহী হেনরিয়েটা এইচ ফোর কক্সবাজারে সফরে বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে মিয়ানমারের সেনা নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার দুরবস্থা স্বচক্ষে দেখেন এবং তাদের কাছ থেকে নির্যাতনের কথা শোনেন। গত দুদিনে, ইউনিসেফের প্রধান নির্বাহী ইউনিসেফ পরিচালিত লার্নিং সেন্টারও ঘুরে দেখেন।
সোমবার তিনি প্রথমবারের মত বাংলাদেশে চারদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান। তাঁর সঙ্গে সফর করছেন জাতিসংঘের মানবতা বিষয়ক বিশেষ দূত আহমেদ আল মেরাইক।
এর আগে গত জানুয়ারিতে ইউনিসেফ প্রধান নির্বাহী হেনরিয়েটা মিয়ানমার সফর করেন। গত ৩০ বছরে এটাই ছিল কোনো ইউনিসেফ প্রধানের প্রথম মিয়ানমার সফর।
আগামীকাল বুধবার ঢাকা হয়ে ফিরবেন তিনি। সফরকালে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কয়েকটি বৈঠক করার কথা রয়েছে ইউনিসেফ প্রধান হেনরিয়েটার।
অঙ্গীকার অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে না মিয়ানমার: শেখ হাসিনা
এদিকে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সই করা অঙ্গীকার অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না মিয়ানমার।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তার সংসদ ভবনের কার্যালয়ে বাংলাদেশের বন্ধু সম্মাননা অর্জনকারী ড. পল কনেট ও এলেন কনেটের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে চুক্তি করেছিলাম। কিন্তু দেশটি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। প্রায় ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীকে কক্সবাজারে আশ্রয় প্রদান করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সংখ্যায় স্থানীয় জনগণকেও ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, তার সরকার বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আশ্রয় প্রদানে নোয়াখালীর ভাসানচর নামে একটি দ্বীপের উন্নয়ন করছে, যাতে করে রোহিঙ্গারা সেখানে উন্নত পরিবেশ পেতে পারে। আপাতত ২৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে সেখানে স্থানান্তর করা হবে।
সাক্ষাৎকালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক পল কনেট ও এলেন কনেট বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রে একটি কনসার্ট আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছেন এবং সেখান থেকে অর্জিত অর্থ ইউএনএইচসিআরের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের প্রদান করা হবে বলে জানান।