Srinagar: BSF jawans stand guard during curfew in Srinagar on Monday. The BSF has been deployed on law and order duty after 12 years as the unrest enters 45th day in Kashmir Valley. PTI Photo by S Irfan (PTI8_22_2016_000242A)

দর্পণ ডেস্ক : আধা-সামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে হামলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করলেও জম্মু-কাশ্মীরের একাংশে কারফিউ অব্যাহত রেখেছে ভারত।বৃহস্পতিবারের হামলা-পরবর্তী সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে জম্মুতে জারি করা হয় কারফিউ। শুক্রবার জারি করা সেই কারফিউ শনিবারও অব্যাহত রয়েছে।

ওই আত্মঘাতী হামলায় রিজার্ভ পুলিশের ৪০ জনেরও বেশি সদস্য নিহত হওয়ার পর সেখানে কারফিউ জারি করা হয়। কারফিউ চলাকালেই জঙ্গিদের পেতে রাখা ভয়াবহ বোমায় (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস-আইইডি) নতুন করে একজন ঊর্ধ্বতন সেনা-কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।

সম্প্রচারমাধ্যম নিউজ এইটিন-এর খবরে অনির্ধারিত সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, আব্দুল রশিদ গাজী নামের আফগান যুদ্ধফেরত একজন বোমা বিশেষজ্ঞের পরিকল্পিত বিস্ফোরণেই ওই সেনা কর্মকর্তা প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবারের হামলাতেও তাকেই দায়ী মনে করছে ভারতীয় গোয়েন্দারা।

বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) আত্মঘাতী হামলার কবলে পড়ে রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের গাড়িবহর। ৭০টি গাড়িতে বাহিনীর প্রায় ২৫০০ সদস্য জম্মু থেকে কাশ্মীরে যাচ্ছিলেন। সে সময় ৪৪ জন সদস্যকে বহনকারী একটি বাস প্রায় সাড়ে তিনশ’ কেজি বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ির হামলার শিকার হয়। জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-ই মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করে। ভারতীয় গোয়েন্দাদের উদ্ধৃত করে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, সাবেক আফগান যোদ্ধা আব্দুল রশিদ গাজী ওই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী।

জম্মুর ডেপুটি কমিশনার রমেশ কুমার শনিবার হিন্দুস্তান টাইমস’কে বলেছেন, কারফিউ চলাকালে সরকারি চাকুরিজীবীদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অতিরিক্ত নজরদারির আওতায় নেওয়া হয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সতর্কতার অংশ হিসেবে বাসিন্দাদের ঘর থেকে বাইরে বের না হওয়া এবং গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ডেপুটি কমিশনারের দাবি, বৃহস্পতিবারের হামলার পর শুরু হওয়া শন্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুক্রবার বিকেল থেকে সহিংস হয়ে ওঠে। বেশ কয়েকটি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। তবে সন্ধ্যার মধ্যেই প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হন বলে দাবি করেছেন তিনি। তা সত্ত্বেও কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়নি। ডেপুটি কমিশনার জানান, জম্মুতে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসাধারণের কাছে সহযোগিতা প্রত্যাশা করা হয়েছে। দিনের বেলা কারফিউ চলমান রাখার কথা জানিয়ে রমেশ কুমার আভাস দিয়েছেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর শনিবার সন্ধ্যায় তা তুলে নেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হতে পারে।

প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করলেও কারিফউ চলাকালেই নওসেরা সেক্টরে জম্মু-কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় এক পেতে রাখা বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে। ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, বোমাটি নিস্ক্রিয় করতে গিয়ে মেজর পদমর্যাদার এক সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। সেনাবাহিনীর প্রকৌশল শাখায় বোমা বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। নওসেরা সেক্টরের রাজৌরি জেলায় নিয়ন্ত্রণ রেখার দেড় কিলোমিটার অভ্যন্তরে বোমাটি নিস্ক্রিয় করতে গিয়ে বিস্ফোরণের কবলে পড়েন ওই কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবারের হামলার মতো এদিনের বোমাটি বিস্ফোরিত হওয়ার ক্ষেত্রেও সাবেক আফগান যোদ্ধা আব্দুল রশিদ গাজীকে মূল পরিকল্পনাকারী বলে সন্দেহ করছে ভারত। নিউজ এইটিনের খবরে অনির্ধারিত সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে,  রশিদ গাজী সম্ভবত গত বছর (২০১৮ সাল) ডিসেম্বরে কাশ্মিরে প্রবেশ করেছেন। তিনি একজন বোমা বিশেষজ্ঞ।