দর্পণ ডেস্ক : বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় নানামুখী অনিয়ম দূর করে জনগণের জন্য মানসম্মত সেবা এবং ভেজালমুক্ত ওষুধ নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

সরকারি এবং বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্ট একটি আদেশ জারি করেছে। সরকারি চিকিৎসকদের বেসরকারি হাসপাতালে সেবা দান কেন অবৈধ নয় জানতে চেয়ে রুল জারির পাশাপাশি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নে কমিশন গঠনের আদেশ দিয়েছে আদালত।

এদিকে, উচ্চ আদালতের আদেশকে স্বাগত জানিয়ে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, সরকারি অফিসিয়াল সময়ের বাইরে কেউ যদি প্রাইভেট প্র্যাকটিসে যায় তবে তার শাস্তি হওয়া দরকার।

এর আগে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান হুঁশিয়ার করে বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকলে চিকিৎসকদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না; আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরে লাইসেন্সবিহীন ১৪টি হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

এদিকে, গতকালই রাজধানীর কলেজগেট এলাকায় দুটি ওষুধের দোকানে অভিযান চালিয়ে চার লাখ টাকা জরিমানা এবং একজনকে একবছরের কারাদণ্ড দিয়েছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় জব্দ করা হয় বেশ কিছু অবৈধ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। এমনকি অনেক দোকান মালিক তাদের ড্রাগ লাইসেন্সও দেখাতে পারেননি।

অভিযানে দায়িত্বপালনরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধগুলো আবার প্যাকেট করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। বেশ কিছু নকল ঔষধ, অনুমোদনহীন ওষুধ, এমনকি ভারতের সরকারি হাসপাতালের ওষুধও এসব দোকানে পাওয়া গেছে।

অপরদিকে দেশে মানসম্মত ওষুধের উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যাগ বাস্তবায়িত হলে দেশ মানসম্মত ওষুধ রপ্তানি করেও প্রচুর বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করতে পারবে বলে মনে করেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে দ্রুত বিকাশমান শিল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ওষুধ শিল্প। একটা সময় চাহিদার প্রায় ৮০ ভাগ আমদানি করতে হলেও এখন প্রায় ৯৭ ভাগ ওষুধই উৎপাদিত হচ্ছে দেশে। ফলে অনেক কম দামে ওষুধ কিনতে পারছে সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি সম্প্রসারিত হচ্ছে রপ্তানি বাজারও। বর্তমানে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ।

গুণগতমান ভালো হওয়ায় বেশ কয়েকটি দেশীয় কোম্পানি উন্নত দেশের ঔষধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জিএমপি (গুড ম্যানুফাক্চারিং প্রাকটিস) সনদ অর্জন করেছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত ঔষধ ক্রয় করছে।