দর্পণ ডেস্ক : ‘শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছানো’ সরকারের আগামী দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মপরিকল্পনা । এতে জনগণের দোরগোড়ায় প্রয়োজনীয় সেবাগুলো সহজে পৌঁছানো যাবে। আর এ জন্য প্রয়োজন ডিজিটাল মাধ্যম। সেই মাধ্যম ব্যবহার করতে হলে প্রয়োজন হবে ডিজিটাল ডিভাইস।
জানা গেছে, বর্তমানে ডিজিটাল ডিভাইস তৈরির পাশাপাশি ৯০০ ডিজিটাল সার্ভিস তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০০ সার্ভিস প্রায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা ।
জানা গেছে, যেকোনও ধরনের ফরম, চাকরির আবেদন, জমির পর্চা, থানায় জিডি, পাসপোর্টের আবেদন ফরমসহ সরকারি অফিস থেকে যে ধরনের সেবা পাওয়া যায়, তার সব কিছুই ডিজিটাল ফরম্যাটে পাওয়া যাবে। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে বিশেষ সেবা পেতে যেমন জেলা বা উপজেলা শহরে আসতে হয়, সেই সেবা ঘরে বসে বা ডিজিটাল সার্ভিস ডেলিভারি পয়েন্টে পাওয়া যাবে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমার গত মেয়াদে সরকারের প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে নিয়ে সেবাগুলো চিহ্নিত করেছি। দেখা গেল, সব মিলিয়ে সরকারের দুই হাজার ৭৬০টি সেবা খুঁজে বের করতে সক্ষম হই। এর মধ্যে ৯০০ সেবা চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলোর সঙ্গে মানুষের সরাসরি সম্পর্ক আছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের চেষ্টা হলো, এই সেবাগুলো আমরা মোবাইলে দিতে চাই। ফলে সার্ভিসগুলো যেন মোবাইল কম্প্যাটিবল হয়— সেই চেষ্টা করা হবে।’ তিনি জানান, এরইমধ্যে ২০০ সেবা ডিজিটাল করা আছে। কিছু ঘষামাজা করলে সেগুলো ১০০ ভাগ ব্যবহার উপযোগী হয়ে যাবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘এর বাইরে আমরা দুটো অ্যাপ তৈরি করছি। এর একটি শিশু সুরক্ষা অ্যাপ। অ্যাপটি বিভিন্নভাবে শিশুদের সুরক্ষা দেবে। অন্যটি হলো, কোরআনের ডিজিটাল ভার্সন তৈরি করা হচ্ছে। এর বাইরে থাকছে ৯০০টি সেবা। আমরা বলে আসছি, সরকারের নিজের প্রয়োজনে সার্ভিস তথা অ্যাপ তৈরি হচ্ছে, পরে জনগণের প্রয়োজনটা দেখা হচ্ছে।’ তিনি ব্যাখ্যা দেন, জনগণকে দ্রুত এবং বেশি সেবা দিতে হলে সবার আগে সরকারের প্রয়োজনটাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, এখন সরকারের প্রতিটা মন্ত্রণালয়ই জানে কী কী অ্যাপ দরকার। এই দরকারের জায়গাটা চিহ্নিত করে দেওয়া গেছে। ফলে কাজ দ্রুত হবে। দেশের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলোকে (ইউডিসি) সার্ভিস ডেলিভারি পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
জানা গেছে, এবার এই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে দেশের সবগুলো পোস্ট অফিস। দেশের অফিসগুলোকে ডিজিটাল করে সার্ভিস ডেলিভারি পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হবে। যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন, তারা যেন হাতে হাতে সেবা পান, সেই ব্যবস্থা করা হবে। আর যারা স্মার্টফোন বা স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহারের বাইরে থাকবেন, তারা যেন ইউডিসি ও পোস্ট অফিস থেকে সার্ভিস ডেলিভারি নিতে পারেন।
এছাড়া, সারাদেশে যেসব ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ গড়ে তোলা হয়েছে, সেগুলোকেও পরিকল্পনায় রাখা হচ্ছে। এসব ল্যাবের বেশির ভাগ গ্রাম এলাকায় হওয়ায় সেগুলোকে সার্ভিস ডেলিভারি পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায় কিনা, সেটাও বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
দেশে মোবাইল উৎপাদন আমদানির চেয়ে বেশি হলে সরকার মোবাইল নির্মাতাদের ৯০০ ডিজিটাল সার্ভিস নিয়ে তৈরি একটি সমন্বিত অ্যাপ স্মার্টাফোনে প্রি-লোড করে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, ৯০০ অ্যাপ তো আর মোবাইলে দেওয়া সম্ভব নয়। এমন একটা অ্যাপ তৈরি করতে হবে, যেখানে ৯০০ অ্যাপ বা সেবা সমন্বিত থাকবে। যাতে একটি অ্যাপে প্রবেশ করে সব সেবা ব্যবহার করা যায়।