যুক্তরাজ্য ভিত্তিক অর্থনৈতিক পরামর্শ কেন্দ্র ‘সেন্টার ফর ইকোনমিকস এন্ড বিজনেস রিসার্চ’ (সিইবিআর) এর ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিল’ (ডব্লিউইএলটি) প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে জিডিপির আকারের ভিত্তিতে বৃহৎ অর্থনীতির দেশের তালিকায় ৪১তম অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। তালিকায় ভারতের অবস্থান ৫ম এবং পাকিস্তান ৪৪তম।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলংকা ৬৬তম, নেপাল ১০১তম, আফগানিস্তান ১১৫তম এবং ভুটান ১৬৬তম।
সিইবিআর প্রতিবেদনের দশম সংস্করণ ছিল এটি। প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে, সামনের বছরগুলোতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। ২০০৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নেওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে মূল্যায়ন করা হয়েছে ১৯৩টি দেশের বার্ষিক অবস্থান। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ সম্ভাব্যতা বিচার করে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত দেশগুলোর অবস্থানের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তালিকায় শীর্ষ পাঁচ অর্থনীতির দেশ হিসেবে নাম রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, জার্মানি ও ভারতের।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিল অনুযায়ী, আগামী ১৫ বছরে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে। ২০২৩ সাল নাগাদ শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩৬তম হবে। আর ২০২৮ সাল নাগাদ ২৭তম অবস্থানে চলে আসবে বাংলাদেশ। ২০৩৩ সাল নাগাদ এ অবস্থান হবে ২৪তম।
সিইবিআর-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮-২০৩৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে গড়ে ৭ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হওয়ার কথা। এর মধ্য দিয়ে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০৩৩ সালে ১৯ ধাপ অগ্রগতি হয়ে ২৪তম বৃহত্তর অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। ডব্লিউইএলটি অনুসারে, ২০১৮ থেকে ২০৩৩ পর্যন্ত টানা সর্বশেষ অবস্থানে থাকছে টুভালু।
ব্রিটিশ এই প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, ভারতীয় বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার, দেশীয় ও সরকারি ব্যয়ে বাংলাদেশ ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। প্রায় ৪৩ শতাংশ বাংলাদেশি কৃষি কর্মের সঙ্গে যুক্ত। যাদের অধিকাংশই ধান এবং পাট উৎপাদন করেন। এছাড়া দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভুট্টা, শাকসবজি এবং গমের উৎপাদন ক্রমবর্ধমান ভূমিকা রাখছে।
সিইবিআর বলছে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট আরো গুরুতর আকার ধারণ করছে। আমদানির হার বেশি থাকায় বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের সফলতা নিয়ে ঝুঁকিও দেখছে প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য অবকাঠামো খাতে অর্থায়ন ও রাজস্ব বৃদ্ধি এবং সামাজিক নিরাপত্তার জন্য সরকারকে নতুন নতুন খাতের দিকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।