US President Donald Trump and First Lady Melania Trump take photos with members of the US military during an unannounced trip to Al Asad Air Base in Iraq on December 26, 2018. - President Donald Trump arrived in Iraq on his first visit to US troops deployed in a war zone since his election two years ago (Photo by SAUL LOEB / AFP) (Photo credit should read SAUL LOEB/AFP/Getty Images)

দর্পণ ডেস্ক : গত বুধবারে বড়দিনের চমক হিসেবে হঠাৎ করেই ইরাকে মার্কিন সেনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সফরসঙ্গী হিসেবে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও ইরাকে গিয়েছিলেন। প্রায় দুই বছর ধরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালনকালে এই প্রথমবারের মতো ইরাকে গেলেন ট্রাম্প, ইরাকের প্রতিবেশী সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে সেখানে যাবার এ তথ্য নিশিচত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

হঠাৎ এ সফরে এসে ট্রাম্প ইরাকে তিন ঘন্টার মতো সময় অতিবাহিত করেন। যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার পথে তিনি জার্মানির রামস্টাইন বিমান ঘাঁটিতে থেমে দেড় ঘন্টা অবস্থান করেন। এখানে ঘাঁটির একটি হ্যাঙ্গারে উপস্থিত কয়েকশ সেনার মধ্যে কয়েক জনের সঙ্গে হাত মেলান ও ছবি তোলেন এবং সেনাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলেন।

সেনাদের সাথে কথা বলছেন ট্রাম্প

রয়টার্সের আরেক প্রতিবেদনে জানা যায়, ট্রাম্পের আকস্মিক এই সফরকে ইরাকের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন অভিহিত করে এর নিন্দা জানিয়েছেন ইরাকি রাজনৈতিক ও মিলিশিয়া নেতারা।

ইরাকি আইনপ্রণেতারা জানিয়েছেন, ট্রাম্প ও ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদির মধ্যে বৈঠক কোথায় হবে তা নিয়ে দুপক্ষের মতভেদের কারণে সেটি বাতিল করা হয়েছে।

ইরাকি পার্লামেন্টের ইসলাহ ব্লকের নেতা সাবাহ সাদি পার্লামেন্টের জরুরী অধিবেশনের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘ইরাকের সার্বভৌমত্বের এই স্পষ্ট লঙ্ঘন নিয়ে এবং ট্রাম্প, ‍যার নিজের সীমা সম্পর্কে জানা উচিত, তার এসব আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ থামাতে আলোচনার জন্য অধিবেশনে বসা দরকার। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারিত্বের দিন শেষ হয়েছে’।

সফর প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স জানিয়েছেন, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় ও সফরের অল্প আগে সফর সম্পর্কে জানানোয় বৈঠকটির আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের মধ্যে ‘টেলিফোনে হৃদ্যতাপূর্ণ কথাবার্তা’ হয়েছে এবং আব্দুল মাহদি নতুন বছরে হোয়াইট হাউসে সফরে আসার ট্রাম্পের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছে।

কিন্তু অন্য এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী মাহদির দপ্তর জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওই সফর সম্পর্কে ইরাকের নেতৃত্বকে সময়ের আগেই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইরাকি প্রধানমন্ত্রী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট টেলিফোনে কথা বলেছেন ‘কারণ কীভাবে বৈঠক পরিচালনা হবে তা নিয়ে মতভেদ তৈরি হয়েছিল’।

ইরাকি আইনপ্রণেতারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের পরিকল্পিত বৈঠক কোথায় হবে তা নিয়ে দুই নেতার মতভেদ হয়েছিল, ট্রাম্প আইন আল আসাদ সামরিক ঘাঁটিতে বৈঠকটি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এই প্রস্তাবে রাজি হননি আব্দুল মাহদি।

ওপর দিকে ইরাকি পার্লামেন্টের ‘ইসলাহ ব্লক’ নেতা সাবাহ সাদি পার্লামেন্টের জরুরী অধিবেশনের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘ইরাকের সার্বভৌমত্বের এই স্পষ্ট লঙ্ঘন নিয়ে এবং ট্রাম্প, ‍যার নিজের সীমা সম্পর্কে জানা উচিত, তার এসব আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ থামাতে আলোচনার জন্য অধিবেশনে বসা দরকার। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারিত্বের দিন শেষ হয়েছে’। অন্যদিকে ‘ইসলাহ ব্লক’-এর প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া নেতা হাদি আল আমিরির নেতৃত্বাধীন ‘বিনা ব্লক’ ইরাকে ট্রাম্পের সফরের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বলেন, একই পার্লামেন্টে ‘ট্রাম্পের সফর কূটনৈতিক শিষ্টাচারের চরম ও পরিষ্কার লঙ্ঘন, এর মাধ্যমে ইরাক সরকারের প্রতি তার অবজ্ঞা ও শত্রুতা প্রকাশ পেয়েছে। ট্রাম্পের সফর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতির প্রকৃতি ও এর প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে এবং এই উদ্দেশ্যগুলো ইরাকের নিরাপত্তার জন্য বিপদ হতে পারে কি না সে প্রশ্নও দেখা দিয়েছে’।