দিবাকর সরকার, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালী-৪ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের কাছে তৃনমূল পর্যায়ের জনগনের দাবী সম্বলিত ‘জনতার ইশ্তেহারে জনদাবী’ শীর্ষক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলার পাঁচটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। উপজেলার রিফ্লেকশন একশন দল, উপকূলীয় জনকল্যান সংঘ, কৃষকমৈত্রী, গণগবেষণা দল ও চম্পাপুর যুব উন্নয়ন ক্লাব, বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা আভাস ও একশনএইড বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় এ সংবাদ সম্মেলনের অয়োজন করে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণ গবেষনা দলের সভাপতি মোসা. হাওয়া বেগম। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন- উপকূলীয় জন কল্যান সঙ্গ এর সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন, কোষাধক্ষ্য- সবিতা রানী, উপজেলা রিফ্লেকশন একশন দলের সভাপতি- রিজিয়া বেগম, সদস্য- সুগন্ধা রানী, উপজেলা কৃষক মৈত্রী সংগঠনের কোষাধক্ষ্য মোসা. মর্জিনা বেগম, উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়ন যুব উন্নয়ন ক্লাবের সাধারন সম্পাদক- ইশিতা আক্তার প্রমূখ। মোসা. হাওয়া বেগম তৃনমূল পর্যায়ের জনতার ১২ দফা দাবী উপস্থাপন করেন। জনদাবী সমুহ- (০১) কৃষি জমির মধ্যে যে খালগুলো আছে তা মৌজা নকশা অনুযায়ী খাল পুনউদ্ধার, খনন এবং অবৈধভাবে দখলদার কবল থেকে খাল গুলো উদ্ধার করা। এসকল কার্যক্রমে কৃষকদের সম্পৃক্ত করা। (০২) ভেঙ্গে যাওয়া বেড়ী বাঁধের দ্রুত, শক্ত ও মজবুত এবং দীর্ঘস্থায়ী বাঁধ নিমার্ণের মাধ্যমে কৃষি জমিতে লবন পানির প্রবেশ ঠেকাতে জনপ্রতিনিধিদের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহন। বড়ীবাঁধ নির্মানের ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করন। এ ক্ষেত্রে সোস্যাল অডিট টিম, কমিউনিটি মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে ও কাজের সাথে সম্পৃক্ত করন। (০৩) বোরো মৌসুমে কৃষদের স্বার্থে স্লুইজ ও খাল এবং কালভার্টের মুখে জাল ফেলে অবৈধ মাছ শিকারীদের এ সকল স্থানে মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও বোরো মৌসুমে স্লুইজ ও খাল এবং কালভার্টের মুখে বাঁধ দিয়ে মিঠাপানি সংরক্ষনের জন্য সরকারী বরাদ্ধ নিশ্চিত করতে হবে এবং এই সকল কাজ বাস্তবায়নের সময় কৃষকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। (০৪) প্রতিটি স্লুইজ ও কালভার্ট রক্ষনাবেক্ষনের জন্য পূর্বের আইন ও ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী সরকারি খালাসী নিয়োগ দিতে হবে। যাহাতে কৃষকরা তাহাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কৃষি কাজের জন্য পানি ওঠানো নামানোর ক্ষেত্রে সঠিক ব্যবহার করতে পারে। আগাম ও লবন সহিষ্ণু জাতের কৃষিবীজ, কৃষি-উপকরন সকল কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী সরকারিভাবে সহায়তা দিতে হবে। (০৫) ইকোনমিক জোন (তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা সামুদ্রিক বন্দর) যাদের ভূমি অধিগ্রহন করা হয়েছে তাদেরকে কোন জিনিসের কত মূল্য সরকার নির্ধারন করে ওই এলাকায় জনসমুক্ষে দৃশ্যমানস্থানে মূল্য তালিকা প্রকাশ করতে হবে। (০৬) ইকোনমিক জোন (তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা সামুদ্রিক বন্দর) চাকুরীপ্রার্থী বেকার জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এই উপজেলায় সরকারী টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠান (আইটি, ট্রেড) স্থাপন করা। (০৭) কলাপাড়া উপজেলায় নারী ও শিশু নির্যাতনের হার কমানোর জন্য কঠোর আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে। দ্রুত ট্রাইবুন্যালে সল্প সময়ে শিশু হত্যা, নারী হত্যা, নারী ও শিশু নির্যাতন বিচার করে প্রকৃত অপরাধীদের সাজা দিতে হবে এবং জনস্বার্থে ইউনিয়ন এর গুরুত্বপূর্ন স্থানগুলোতে পুলিশ ক্যাম্প বসাতে হবে। (০৮) ইউনিয়ন পরিষদের সামর্থবৃদ্ধির জন্য জাতীয় বাজেটের (রাজস্বের) বড় অংশ ইউনিয়ন পরিষদকে দিতে হবে। (০৯) শিক্ষাখাতে বাজেটের বরাদ্ধ বাড়াতে হবে এবং কলাপাড়া উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা বাড়াতে হবে। (১০) যেসকল ইউনিয়নে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাান কেন্দ্র নাই সেখানে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাান কেন্দ্র দিতে হবে। এই সকল সেবা কেন্দ্রে নারী ও কিশোরীদের জন্য মহিলা ডাক্তারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সিটিজেন চার্টারসহ ঔষধের তালিকা সেবাকেন্দ্রে প্রদর্শন করে রাখতে হবে। (১১) গ্রামীন জনপদের রাস্তাগুলো পাকা করতে হবে। যাহাতে বর্ষাকালে কোমলমতি শিশুরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারে এবং অসুস্থ রোগীদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য শহরের উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেয়া সম্ভব হয়। (১২) জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় বাজেটে জন অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের (ঔষধ, প্যাথলজি টেষ্ট, শিক্ষা ও উপকরন) উপড় ভ্যাট কমাতে হবে। সর্বোপরি এসমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণের সাথে সাথে যেন কোন প্রকার দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলপ্রীতি যেন না হতে পারে সেজন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এসময় বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি ও কলাপাড়া প্রেসক্লাব, রির্পোটাস ক্লাব এবং রিপোর্টাস ইউনিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কৃষক মৈত্রি দলের মর্জিনা বেগম, উপক’লীয় জনকল্যান সংঘের মো: জয়নাল আবেদীন, সবিতা রানী, রিফ্লেকশন একশন দলের সুগন্ধা রানী, রাজিয়া, চম্পাপুর যুব উন্নয়ন ক্লাবের মোসা: ইষিতা, মো: রাব্বি মোল্লা।